ভালো থেকো আমার ভাল বাসা তোমার প্রেমিকা দের নিয়ে! পার্ট ১

বি:দ্র:চটগ্রাম শহরের উপকন্ঠে এর এই সত্য কাহিনি টি নেয়া হয়েছে এক উপজাতি মেয়ের প্রেমের কাহিনি অব লম্বন করে।
 খাগড়াছড়ি এলাকার গ হীন অরন্য যেখানে শিক্ষার আলো আজো অনেক কম ছড়িয়েছে সেই এলাকার এক মেয়ে নাম সুপ্রিয়া মারমা। দেখতে আর ১০টা উপ জাতি মেয়ের মত সে নয়। অনেকটাই বাংগালি ধাচে গড়া চেহারায় রয়েছে অন্য রকম মায়া । তার ভুবন ভুলানো হাসি দেখে যে কেউই প্তন্ময় হতে পারে ।কিন্ত আজ তার অতি আনন্দের দিন ।
কিছুক্ষন পর তার পরীক্ষার রেজাল্ট  বের হবে আর সে এই আনন্দে খুশি মনে ঘুরে বেড়াচ্ছে আর বাবার হাতে স্কুল পাশের সার্টিফিকেট থাকবে জেনে খুব গর্ব তার ।কারন হয়ত তার বংশে সেইই ১ম কোন পাব্লিক পরিক্ষায় অংশ নেয়া মেয়ে ।এজন্য একটু অহম ও আসছে  ।রেজাল্ট বোর্ডে টাংগানো হল। সুপ্রিয়া ১ম বিভাগে পাশ করেছে। তার অতি উতসাহি বাবা খুশিতে মেয়েকে জড়িয়ে ধরলেন ।
মেয়ে ও খুশি ।বাড়ি ফিরতে ফিরতে তারা ২জন এ অনেক গল্প করল আর মিষ্টি কিন ল বাড়ির জন্য।  এর পর আর কিছুই হল না। আনন্দ মাটিকরে  দিয়ে সুপ্রিয়ার লাশ  পাওয়া গেল পাহাড়ের দুরবর্তি স্থানে । লাশের সাথে একটা চির কুট। লেখা আছে প্রতারনার শাস্তি!  বিস্ময়ে পুরো পাড়া হত বাক ! এমন সহজ সরল মেয়ের সাথে এমন হবে কেন? সবাই একই প্রশ্ন করে বেড়াচ্ছে ।
 পরের দিন  সকাল বেলা পুলিশ আসে লাশ নিয়ে যায় । পোস্টমর্টেম করা হবে। কিন্ত পরিবার বাধ সাধে। তারাচায় না তাদের সন্তান আরো লাঞ্চিত হোক। তারা চায় তার শেষ কৃত্য হোক । কিন্ত আইনি জটিলতা দেখাদেয়। কিন্ত পুলিশ তাদের কথা শুন বে না কারন তারা দেখাচ্ছে এটা পুলিশি কেস। তাই যেভাবেই হোক এর পোস্টমর্টেম করতে ই হবে। অব শেষে লাশ নেয়া হল  রিপোর্ট আস ল। মেয়েটাকে বিষ দেয়া হয়েছে রিপোর্ট বলছে। কিন্ত এমন বিষ যা কোন ক্যামিকেল মিশানোনয় এটা হল বুনো এক প্রকার বিষ! সবাই হত বাক। পুলিশ সন্দেহ করছে তার পরিবার কেই কারন এই বিষ ।
বিষক্রিয়ায় মারা গেছে সে এটা ভাবতেই  সবার  চোখ চমকে উঠছে বিশেষ করে সেই এলাকার সাইকেলে করে যাওয়া আসা করা ডাক পিয়ন চাচা মনু মিয়ার।  চাচা সুপ্রিয়ার মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। বার বার কাঁদছেন আর বলে যাচ্ছেন আমার জীবনে এরকম সহজ সরল মেয়ে আর দেখিনি। যে কোন দিন কাউরে এক টা উহ শব্দ পর্যনত করল না সে কিভাবে  এই রকম ভাবে মারা গেল! এই কি দিন ছিল দেখার !প্রতিদিন আমার কাছে আস ত জান তে সুবলের কোন চিঠি আসছে কিনা। তার এই কথা শুনে সুপ্রিয়ার বাপ চিৎকার দিয়ে বলে উঠে কি বল্লা তুমি সুবল??!চমকে উঠে সবাই! কারনেই সুবল কে গ্রাম ছাড়া করা হয়েছে বছর খানেক আগে !এখন ত সব কিছু শেষ ।এই সব বলে আর কি হবে তার চেয়ে সুপ্রিয়াকে দাহ করে আস সবাই মিলে চল।
দাঁড়াও! হঠাত বলে উঠে সুপ্রিয়ার মা আমার মেয়েরে কে মারছে ? তোমরা কি তা জান ? আমি জানি ! সবাই ঘুরে তাকায় তার দিকে। সুপ্রিয়ার মায়ের কথা শুনে তার বাপ চিৎকার করে বলে উঠে  চুপ যা কইতাসি !আমি কিন্ত তোরে মাইরা ফালাব। সুপ্রিয়ার মা বলে উঠে কেন চুপ যামু ?? তুই  পাপ করবি আর তার বলি আমার মাইয়া হইয়া গেসে গা আর তুই এখন ভালা সাইজ্জা বইসা থাক বি?
দারোগা সাহেব উপস্থিত হন তখন ।সুপ্রিয়ার মা পাগলের মত তার কাছে গিয়ে বলে আমার সবামিরে ধইরে নিয়েযান  সে মারসে আমার মাইয়া রে! পুলিশ অবাক হয় নাই ।কারন  অনেক সময় এরক্কম হতেই পারে। এর মাঝে গ্রামের মাঝি আইসা গেল । (মাঝি হল মোড়ল ) তিনি উঠে বলেন কি বলছ সুপ্রিয়ার মা তোমার কি মাথা খারাপ হয়ে গেল ? তোমার মেয়ে মারা গেছে আর তুমি কি তোমার সবামিরেও খোয়াতে চাও? তুমি কিভাবে এই চিন্তা করতে পারলা ? এক বাপ যে তার মেয়েরে এত্ত মায়া করতে পারে সে কিভাবে মারতে পারে? তোমার মেয়ে মারা যাওয়াতে তোমার ত দেখি মাথা পুরাই গেসে গা। যাও ঘরে যাও! দারোগা সাহেব আমার গ্রামের  এই মেয়েটা বড়ই মেধাবি ছিল কারন তার সমানে কেউ আর পড়তে পারে নাই ।এর মা মেয়ের শোকে এমন হয়েগেছে গা।না স্যার !আমি সত্য কথা বলতেসি আপ নি আমারে বিশবাস যান স্যার । দারোগা তখন উঠে দাড়ায় আর বলে আচ্ছা আসেন আমাকে  স্ট্যাটমেন্ট দিয়ে যান ,এই কথা বলার আগেই সুপ্রিয়ার বাপ তার মাকে ধরে নিয়েযেতে চাইলে দারোগার ভয়ে সরে যায় দ্রুত। দারগা তাকে খুজঁতে লোক পাঠায়।পুলিশ তাকে ধরে ও ফেলে!অই কই যাস তুই? তর বউ এ কইসে তুই তর মাইয়ামাইরা ফালাছস সত্য কথা ক কি করছছ?
পুলিশ্ কন্সটেবল আজিজ মিয়ারমাইরের চোটে সে চিৎকার করে বলে হ মারসি আমি ই আমার মাইয়া মারসি!!!

পুলিশ ধরে নিয়ে যায় তাকে। তার বউ এর বিরুদ্ধে সমাজের কানাঘুষাশুরু  হয়ে গেছে ।ছি ছি ছি সুপ্রিয়ার মা এই কাজ কিভাবে করতে পারল। সে কি পাগল হই গেসে!নিজের সবামিরে কিভাবে জেলে দিল?? মাইয়া গেসে বুঝলাম তাই বলে কি নিজের জামাই রেও খোয়ায়তে হবে? সবাইর কোন কথার দিকে তার ভ্রুক্ষেপ নাই ।
সে সুপ্রিয়ার মা । ফ্যাল ফ্যাল করে মেয়ের লাশের দাহ দেখে আর চিল্লায় আমি কেন তোরে ছাইড়া দিসিলাম তোর বাপের কাছে। সে তরে মাইরেলাশ কইরে আমার কাছে আইন্না দিসে।
 পর দিন ...।।
 লোক জন  গ্রামের রাস্তায় তাকের উপর কাকে যেন বসে থাকতে দেখে! হতবাক হয়ে তাকায় !কে এ! দেখে ! সুবল !সুবল কে দেখে গ্রামের পিয়ন দৌড়ে আসেন বলতে থাকে বাপ তুমি ?? কিভাবে আইলা? কেম্নে খবর পাইলা? সুবল কাদঁতে থাকে ।তুমি পলাউ! কেন? কেন চাচা? পুলিশ তোমারে খুঁজে ।তোমার নামে মামলা হইতে পারে ! মামলা?? কেন? সুবলের বিস্ময়। সে ভাবে আমার নামে মামলা?? কে দিতে চায়? পিয়ন চাচা আসলে কি অইছিল কউ দেহি?
সুপ্রিয়া বিষ খাইয়া মইরে গেসে! এতক্ষনে সব বুঝতে পারল সে ।সে এসেছিল সুপ্রিয়ার সাথে দেখা করতে ।তাকে কলেজ এড মিশনের জন্য শহরে নিতে চেয়েছে সে। এই ব্যাপারে তার বাপের সাথে আলাপ করেছিল কিন্ত এই সব কি শুন ছে! তোমার কথা কি সত্য চাচা! হ বাপ! চইলাযাও! বাচঁ তে চাইলে চইলাযাও ।
আমি তারে দেখতে চাই চাচা ! কাঁদো কাঁদো চেহারায় সে বলে। সম্ভব না। চাচার জবাব ।এখন গেরামের কেউই তোমারে দেখ লেই পুলিশে খবর দিব তোমারে সুপ্রিয়ার খুনির লিস্টে নাম দিব ।সুপ্রিয়ার মা তার বাপ রে পর্যনত জেলে দিসে। কি কও? মাসি মাএই কাম কেম নে করসে? সে মাইয়া হারায়া পাগল প্রায়! এখন আর এইদিকে থাকবানা তুমি যাও ভাগো নয়ত তোমারেই খুনি  বানায়া দিব ।
সুবল আর ফিরতে চায়না। সুপ্রিয়া নেই  এর চেয়েকষ্টেরকিছুইহতে পারেনা। সে জেলে যাইতে রাজি কিন্ত যে সুপ্রিয়াকে মারল তার বিচার করেই সে জেলে যাবে ।
 স্থানঃ
পুলিশ স্টেশন
I don't think this is a suicide. পুলিশ বলছে । কিন্ত মজার ব্যাপার হল যেই বিষ এ মেয়েটা মারা গেছে তার থেকে বুঝায় যায় সে আত্নহত্যা করেছে। কিন্ত এখানে বোঝা যাচ্ছে না আসল হত্যাকারি কে? এক একজন এক ধরনের কথা বলছে যা আসলেই অদ্ভুত। কন্সটেবল আজিজ মিয়া পান চিবুচ্ছে আর বলছে স্যার আমরা তো মাইয়ার বাপ রে ধইরে আন সি তারে মাইর ও দিয়া জিগাইসি সে যা কইসে তার অর্থ দাঁড়ায় তার লগে মাইয়া গেসিল স্কুল থাইকা রেজাল্ট আনতে আইনা বাড়ী আউনের পথে তারার লগে কোন সুবল এর দেখা অইসে ।স্যার সুবল রে ধরে জিগাইলে হয় না?? সেই ই যদি মাইয়ারে ভাগাইতে চায়? হুম! পুলিশ অফিসার আহমেদ মাথা নাড়ল তার কথায়।I think e must chat with supria's mother.আমরা আবার চলেন যাই তাদের গ্রামে। আসল কাহিনি অইখান থেকেই আর আজিজ মিয়া তুমি সুবলের খোজঁ নাও সে কই আছে এখন জান। সে নিশ্চয়ই আসছে গ্রামে আসলে তাকে এরেস্ট করবে। আর পোস্ট মর্টেম এর রিপোর্ট এ যেই বিষের আলা মত পাওয়া গেছে তার কি কোন তথ্য মিলেছে? কিভাবে কি হয়েছে?? ইন্সপেক্টর আহ্ মেদ জিজ্ঞেস করছিল কন্সটেবল আজি জ মিয়াকে ।না স্যার অহন ও পাই নাই। তবে লোক লাগাইসি দেখা যাক কি হয়।
This is ridiculous! এটা কিভাবে সম্ভব? মেয়ে টা বিষ খেয়েছে এর ভেতরে এই রিপোর্ট! পুলিশ অফিসার সাজ্জাদ আহমেদ অবাক। দেখছেন মেয়েটা প্রেগ নেন্ট ছিল! তিনি এই রিপোর্ট পেয়েই দৌড়ে গেলেন হেড অফিসের দিকে ,সেখানে আছেন এই কেস ইনভেস্টিগেট করছে যেই অফিসার তার কাছে । তাকে হাতে পেয়েই তিনি ধমক দিয়ে বলে বসেন তুমি কি এটা দেখ নাই আগে ? না দেখেই রিপোর্ট দিয়েছ যে শুধু বিষ খেয়েছে? তোমার চোখকই ছিল? তুমি জান এই কেস কিসের দিকে যাচ্ছে ? বুঝতে পারছ??
 সরি স্যার। আসাদ ইনভেস্টিগেশন অফিসার । সে নতুন জয়েন করেছে । কিছুই বুঝার আগে এই ঘটনা আর স্যারের ধমকে সে একটু কিংকর্তব্য বিমুঢ়!! সে বকা খেয়ে হা করে তাকিয়েছিল । আরেক ধমকে সে হুশ এ আস ল। এই তুমি কি দাড়িয়েই থাকবে নাকি যাবে গিয়েদেখ কেন এই রিপোর্ট আসছে। অই মেয়ের কি সুবলের সাথে আসলেই সম্পর্ক ছিল কিনাতাও খতিয়েদেখ আর সুবল কে পাইলে ধরে আন,হারাম জাদা গালি দিল সে।এই  কেস সামান্য বিষ খাওয়া কেস না। এর ভেতঅর প্রেম ঘটিত ব্যাপার আছে তাজানা কিন্ত এর মাঝে সমস্যা করেছে মেয়ের বাপ আর মা। তারাকেন উলটা পালটা কথা বলা শুরু করেছে তা বুঝতে পারছি না। মা বলছে বাপ তার মেয়ে কে মেরেছে কিন্ত কেন? পুরো ব্যাপার টাখতিয়ে দেখা দরকার।সহজ একটা কেস কে জটিল করেতোলার কারন কি?
কথা গুলি বলতে বলতে আহ মেদ স্যার চলে গেল! আসাদ ও মোটর সাইকেল এ চড়ে বের হবে  এমন সময় কল। মোবাইলেকল দেখে সে একটু ও চমকিত হয়নাই উলটা আশা করছে  যে তার আর যাওয়া র দরকার নাই।সোর্স ফোন করেছে। সে কল ধরেই চিৎকার, অইব্যাটা তুই কি ইনফরমেশন দিসস?
তরে পাইলে হয় এক বার। কি কন স্যার?আমি ত সত্যইবলসি। সেই মাইয়া বিষ খাইসে আরসুবলের সাথে তার সম্পর্ক আছে ।ব্যাটা বদের হাড্ডি! টাকা খাইতে আবার মিথ্যা কস? তোর কপালে জেল আছে।স্যার মাফ কইরে দেন !আমি যেই  জিনিস চখে দেখছি তাই কইসি।অই অঘা! তুমি কি তোমার ঘরের বউএর সাথেকথা কইতে দ্যাখে তারে ও তেমনভাব? আসাদ এর মাথা এখন নষ্ট!নতুন জয়েন করেগালি খে ইয়ে বড় স্যারের এখন তারমাথায় আর কিচ্ছু আসছে না। এখন যা আসছে তা হল সুবল কে বের করাআর মাইর এর উপ্রে রাখা তাহলে তার মাথা  ঠিক হবে। সে সোর্স কে বলে শুন আজকের ভেতরে সুবলের খবর নিবি কই আছে দেখবি তারে। খুজেঁ বের করবি। সঠিক ঠিকানা দিতে পারলে ৫০০০ টাকা পাবি বুঝলি?? এই লাইনে তুই পুরানা! বুঝিস ত! হ স্যার! দিমু! বলেই সে ফোন কেটে দেয়।!সে এখন অন্য দিকে মন দিয়েছে। কিছুতেই তার মন আসছে না এই দিকে ।

সুপ্রিয়ার বাসাঃ
সুপ্রিয়ার বাসায়  এখন সমস্যা আছে সেইখানে যাওয়ার কোন উপায় নাই। মানুষ আসছে আর যাচ্ছে কিন্ত সুপ্রিয়ার মায়ের কোন খবর নাই। সে চিত হয়ে আছেন তার ঘরে! মানুষ আসছে তার কাছে আর বুঝিয়ে যাচ্ছেন। অবস্থা এমন যে তার মায়ের দিকে আর তাকানো যাচ্ছে না। আমার সাথে কথা কউ? ছোটছেলেসুপ্রিয়ার ভাই আদরের আক্ষেপ্তার মা তার সাথে কথা কয় না।
আশা আইসছে! অমা মা আশা দি আইসছে!উত্তর নাই। কথায় বলে না এই মহিলা। মরে গেছে নি? ধাক্কা দিয়ে দেখল এক প্রতি বেশি ।দেখি আসলেই ! বাইচ্চানাই সে! সবাই আচ্ছন্ন শোকে! এক দিন ওগেল না মেয়ের শোকে মা গেছে মরে। খবর শুনে আবার পুলিশ আসে।what is this!  একের পর এক মৃত্যু দেখে ইন্স পেক্টর সম্পুর্ন অবসাদ গ্রস্থ। তিনি এই খুনের কিনারা পর্যন্ত এসে এখন আরেক খুন দেখে কিছুতেই মিলাতে পারছেন না আসলে কি হতে যাচ্ছে।মাথায় হাত আসাদের ।সে কিছুই বুঝে  উঠার আগে সব কিছু শেষ ।
পুরো এক সপ্তাহের বেশি সময় লেগে গেছে কিন্ত সুবলের দেখা নেই । তার মা সব শুনেছে আর সেজন্য ছেলেকে শহরে পাঠিয়ে দেয় যেন পুলিশ তাকে ধরতে না পারে। এখন সে দেশ ছেড়ে যাবে এই ব্যাপার টা পুলিশের কানে আসে নাই। যাক গে পুলিশ তাকে খুজঁছে অনেক দিন।কিন্ত সে দেশ ছেড়ে চলে যাবে এই কথা সোর্স বলতে পারেনাই। সুবল দেশে না  থাকার জন্য তাকে তার পিসির কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছে তার পরিবার। কিন্ত তারা এই বিষয়ে পুলিশের কাছে মুখ খুলতে নারাজ। পুলিশ বহুবার তাদের জেরা করেছে  কিন্ততার মায়ের অতিচালাকির কারনে পুলিশ ধরতে পারেনি ।
সুবল ভারতে পার যেদিন হবে সেইদিন তার মাকে ফোন দেয়ার কথা ছিল কিন্ত তার মা ছেলের সাথে কথা বলতে চান নাই কারন পুলিশ ঘুরছে তার বাড়ির আশপাশ।পরিস্থিতি এমনই যে চাইলেও কথা বলা সম্ভব নয়। রাজ্যেশ্বরী দেবীর বুদ্ধির জোরে তার পুত্র বেচে যাবে এই সবার চিন্তা তার পরিবারের। কিন্ত
বিধাতার ইচ্ছে অন্যরকম ছিল। সুবল ভারতে  পৌছে গেলেও   তার ভেতরে সেই বিবেকের তাড়না  ছিল। সে কিছুতেইএই ভাবে পালাতে চায়নি। কত শত সৃতি জমা আছে সেইখানে কিন্ত আর কখনই যাওয়া হবে না আর দেখা হবে না সুপ্রিয়াকে আর ক খনই না। ভাবতেই জল আসছে তার চোখে। চোখ মুছে সে  আর  সুপ্রিয়ার কথা ভাবতে থাকে যে সে কিভাবে বিষ খেল? আর তার নাম সুপ্রিয়ার সাথে ?? সুপ্রিয়াকে পছন্দ করত সত্য কিন্ত সু তাকে দাদা ছাড়া আর কিছুই ভাবে নি। তার চঞ্চলা চপলা কথায় সুবলের মন তার প্রতি ঝুকেছে সত্য কিন্ত সে জান ত সুপ্রিয়াতাকে দাদার চেয়ে বেশি কিছু ভাবেনি।
বাস ছেড়ে দিচ্ছে দাদা আপনি কল কাতা কই যাবেন ? সম্বিত ফিরে আসে সুবলের চিন্তায় ছেদ পড়ে। সে বলে আপাতত একটা হোটেল এ উঠব এর পর সেখান থেকে বালিগঞ্জ। আপনিকইযাবেন?
আমি ত শহরেইযাচ্ছি ।তা মশায় আপনার নামটা ? ঈশা। ওহ আপনি মুস লিম? সুবলের প্রশ্ন? আজ্ঞে না আমি ভারতীয়। লোকটার কাটা কাটা জবাব। বুঝা গেল সে অপছন্দ করেছে তার কথা। 
সুবলের মন পড়ে আছে তাদের গাঁয়ে সুবল আর সুপ্রিয়া আহা কি ছিল সেই দিন গুলি !সে দিন গুলির কথা মনে করে সে কাদতে থাকে। ছোট জাত বলে  তার মা সুপ্রিয়ার পাশ দিয়ে যেত না। কিন্ত সুবলের এসব পছন্দ হত না। সে তার আশে পাশে যেত সাহায্য করত খবর নিত  কিন্ত কি থেকে কি হয়ে গেল এসব ।
সুবলের ভেতর একটা খেদ আসল আমাকে গ্রামে ফিরতে হবে । কারন সুপ্রিয়ার মৃত্যুর কারন আমি। মরে যদি যাই তাও বেশ কিন্ত সত্য কথা বলতে হবে। আমি এইভাবে পালাতে পারিনা।

সুবলের মা সেই সময় ফোন করে। বাপ আমার কেমুন আছস? তোর মাসিরে বইলে দিসি তোরে যেন ভাল মত রাখে।সুবল চুপ করে সব শুনে আর হু হু করতে থাকে।
এরপর  পরের বাস এ বাংলাদেশে চলে আসে সে। সোজা থানায়। মাকে কিচ্ছু না জানিয়ে। তাকে দেখে থানার সবাই অবাক। কারন তারা তাকেই হন্য হয়ে খুঁজছে আর অপরাধি হাজির। স্যার সুবলের উত্তর
আমি সুপ্রিয়াকে ভাল বাসি সত্য কিন্ত তারে আমি খুন করিনাই। পুলিশ তার কথা বিশবাস করেনা বলে না মারলে পালায় গিয়ে ছিলি কেন? ভয়ে স্যার। কিসের ভয় ?তারাআ আমারে ও যদি মানুষে বলছিল আমারে মাইরা ফালাইব এইভয়ে। পুলিশ তার কথায় রহস্যের গন্ধ পায় কি হয়ে ছে আসল কথা বলে ফেল।
স্যার যেদিন সুপ্রিয়ার বাপ আর সে পরীক্ষার রেজাল্ট আনতে গেসে স্কুলে সেইখান থেকে তারা গঞ্জে যায় আমার সাথে তাদের দেখা হয় গেরামের বাজারে আমরা কথাও বলি এর পর তার বাপ তারে বলে তুই বাড়ি যা আমি সুবলের সাথে কথা কইয়া আসছি। সে বাড়ীর দিকে চলে যায়। এর পর? পুলিশ জিগেস করে ।এর পর আমি জানিনা। মানে কি?? তুই এই মিথ্যা কথা বলতে আসছিস এইখানে? খেপে গেছে সবাই। দেখ সুবল মার খাওয়ার আগে বলে ফেল কি করেছিস ?
সুবল বলছি আমারে একটু পানি দেন ।পুলিশ পানি দেয় তাকে । সুবল বলে আমাদের গ্রামের ১ম মেয়ে ছিল সে যে কিনা ছাত্রি ভাল ছিল আর দেখতে ভাল। আমি তাকে বিয়ে করতে চাইসিলাম এই কথা আমি তার বাপকে সেইদিন বলি। এর পর সেই রাতে আমি আবার তার সাথে দেখা করি। আর তারে সব জানাই । সেই দিন সে আমাকে অনেক গালি দেয় বলে আমি আপনাকে দাদা বাদেআর কিছুই জানিনা এর পর আমার রাগ চেপে যায় তার উপর আমি তারে চেপে ধরতেই তার বাপ আইসা আমারে দেখে ফেলে আর বিচার হয়ে যায় সেই রাতের বেলাতেই। সবাই আমার পক্ষে রায় দেয় কারন আমি আমার পরিবার জাতের বলে। মেয়েরে বিয়ে দিয়ে দিতে বলে তারা। কিন্ত সুপ্রিয়া রাজি হয় না।এই ঘটনা সেই রাতের যেদিন তার রেজাল্ট দেয়।সে বলে আমি কলেজে পড়তে চাই। আমি জবাব দেই পড়বে সমস্যা নাই কিন্ত বিয়ে করতে সমস্যা কি? সে বলে তুই আমার গায়ে হাত দিলি কেন আমি তোরে বিয়া করতাম না। কিন্ত আমি জান তাম না তার ভেতরে আরো কিছু আছে। কি? পুলিশের চক্ষু তখন উৎসুক জানার জন্য।
সুপ্রিয়া আগে থেকেই আরেকজনের সাথে শারিরিক সম্পর্কে ছিল এই কথা আমি জান তাম না। কি? পুলিশ তখন বিলিভ করেনাই  বলে শালা একটা মেয়ে বিষ খেয়ে মরে গেছে আর তুই তার চরিত্র নিয়ে কথা কস? তুইই মারসস অরে। বলেই তাকে মারতে উদ্দত হয় পুলিশ কন্সটেবল জিয়া। স্যার এর মিথ্যা কথায় কান দিয়েন না এর বিরুদ্ধে চার্জশিট দেন আর জেলে দেন । স্যার আমার সব কথা শুনেন আগে।
সুপ্রিয়ার সাথে তার অঙ্কের শিক্ষকের প্রেম ছিল স্যার।! পুলিশ মাথা ঘুরায় তখন।সেই ব্যাটা মুসলমান । পুলিশ তখন থ খেয়ে তাকিয়ে আছে। জিস্যার!আমি সত্য বলতেসি এই কথা কেউই জান ত না। আমি তার স্কুলে যাই আর তার স্কুলের বন্ধুদের জিগাই কেউ ই বলেনাই কারন সেই লোক প্রভাবশালি। তার বড় বড় লোকের সাথে খাতির আছে। পুলিশ তখন নাম জানতে চায় তার ।জামসেদ স্যার । পুলিশের চোখ বড় বড় হয়েযায় আর দ্রুত জামশেদ কে এরেস্ট করতে লোক পাঠায়।সেইই  সুপ্র্যা কে মারসে স্যার।
সুবলের আক্ষেপ আমি যদি আগে জানতাম তাহলে  হু হু করে কাদতে থাকে। আমিভয়ে ভারতে পালায় যাই স্যার। আর পরে আইসা জানি সে তার পরিবারকে হুমকি দিয়া রাখসে যে যদি কোন কারনে তার পরিবার এর কেউ এই কথা কয় তাহলে সবাই মারা যাবে। এই ভয়ে কেউই মুখ খুলেনাই। আর সেই শেষ দেখা আমার সাথে সুপ্রিয়ার সেই রাতের পর আমি চলে আসি সকালে শহরে বিকালে শুনি সে পৃথিবীতে নাই ।এর মাঝে কি হইসে জানি না। আমি জামশেদ স্যারের ফাসি চাই। তার বিচার হইতে হবে স্যার।
পুলিশ অঙ্কেরশিক্ষক জামশেদ গাজি কে ধরে আনে। তারগালেচড় থাপ্পর দেয়া হয় আর বলা হয়শিক্ষক হইয়া ছাত্রির শরীরে কেম নে তুই এই কাজ করিলি আর কত দিন যাবত এই কর্ম করতেসস? মারের চোটে
 জামশেদ সবীকার করে যে সে সুপ্রিয়াকে ফুসলিয়ে তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করেছে আর পরে যখন জেনেছে সুপ্রিয়া প্রেগন্যান্ট তখন সে  তাকে  বাচ্চা নষ্ট করার কথাবলে বনাজি এই বিষ খাইয়ে দেয় আর গ্রামের অশিক্ষিত মানুষ কে বুঝ দেয়যে সুপ্রিয়াকে ভুতে পেয়েছে ।তার এই কুকর্মের সাক্ষি ছিল হেডমাস্টার মশাই ,পুলিশ তাকে ও জেলে দেয়।
কিন্ত সুপ্র্যার বাবা কে নিয়ে তার মা কেন এই কথা বলেছিল ?সুপ্র্যার বাপ জান ত ব্যাপার টা কিন্ত ছেলেকে হারানোর ভয়ে তিনি চুপ করে যান ।এত টা প্রভাবশালি ছিল সেই অঙ্কের শিক্ষক।
ফাসি হয়ে যাবার কথা ছিল সেই শিক্ষকের। দেন দরবার করে সে জেল খাটে আর সেই  পরিবারকে ক্ষতিপুরন দেয় ।
বেশ কিছুদিন পর...
টিচার্স ট্রেনিং কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে আছে কিছু নতুন শিক্ষক। হবু সব শিক্ষক হবে ন সবাই জামষেদ সেই খানে আছে। হঠাতই সে তার এই কাহিনি সবাই কে জানায়। সবাই থ খেয়ে যায়। বলে আজো আমি প্রায়শ্চিত্ত করছি। মদের বোতল খেয়ে মাতাল হয়ে ছিলাম আর কি করেছি মনে নাই।
সুবলের মন অশান্ত কারন সে তার প্রেমিকার ন্যায্য বিচার পাইনাই।
তবু কেস চলে আর সুবল রা প্রতীক্ষায় থাকে এক দিন তার ভাল বাসার মানুষ ন্যায্য বিচার পাবে।
হয়ত  হয়ত বা নয়।
প্রতিক্ষা আর প্রতিক্ষা। তবু জামষেদের যা শাস্তি হবার হয়েগেছেসে তার জীবনের সবচেয়ে বড় শাস্তি পেয়েছে সৃষ্টি কর্তা কর্তৃক। তার বাপ মা সহ সবাই এক সাথে মারা গেছে ।
আর আমাদের সুবল
সুপ্রিয়ার সব রনে আজো লেখে
ভাল থেকো আমার ভাল বাসা
কেউ যেন উত্তর দেয় আকাশ থেকে
তোমার প্রেমিকাদের নিয়ে !!!
জানিও জামষেদ স্যার কে সুবল দা।
আর পারলে ক্ষমা করে দিও।
সুবলের ঘুম ভেঙ্গে যায় আর কেদেঁ উঠে হৃদয়
কেন তুই আমারে ভাল বাস লি না রে পাগ লি। এই ভাবে মরে যেতেহয় নারে এই ভাবে মরে যেতে নাই ।আমি এখন কি ভাবে থাকি তোরে ছাইড়া । তুই এইভাবে কেন মরে  গেলি ??
রাতের শেষে দিগন্ত জুড়ে আলো ফুটে উঠে ।সুবল তার ব্যাগ গুছিয়ে চলে যায় অজানার পথে । যাবার সময় ছোট্ট নদীতে সুপ্র্যার জন্য এক ডজন রজনি গন্ধা ফেলে দেয় আর প্রার্থনা করে যেন তার সুপ্র্যা পরকালে ভাল থাকে।
এই কালে না হোক পরের জন্মে সে সুপ্র্যার দেখা পাবেই এই আশা নিয়ে গ্রাম ছেড়ে যায়। মনে মনে বলে ভাল থাকিস আমার ভাল বাসা যেইখানে ই থাকিস।
শেষ

Comments

Popular posts from this blog

কুয়াশা

কবিতার ভালোবাসা ......

Muslim(মুসলিম)