অনিন্দ্যের মায়া

তার চোখ জোড়া দেখে থাকার মতই... কিন্তু আমি তার প্রেমে পড়তে চাই নাই আর প্রেমে পড়ে তাকে হারাবার ইচ্ছে ও আমার ছিল না। কিন্তু আমার ভাল লাগা ভাল বাসা এইসব যেন তার কাছে তুচ্ছ হয়ে যায় কোন এক অজানা কারনেই।
 আমি অনিন্দ্য চক্রবর্তি।পেশায় উকিল। পাশাপাশি ব্যবসাও করি। আমি অবিবাহিত। আজ আমি আপনাদের আমারই কাহিনি শোনাব।
সময়টা ধ্রুন কোন এক বস ন্তের বিকেলে। আমি কলকাতা থেকে সবে বাংলাদেশে এসেছি মাসির বাড়ি বেড়াতে। মাসি আর তার পরিবার বাংলাদেশে থাকেন । আমার মায়ের বাড়ি বাংলাদেশে। মুন্সি গঞ্জে, প্রায় দূর্গা পুজোয় তাই বাংলাদেশে আমার আর আমার পরিবারের বেড়াতে যাওয়া হয়। আমি কলকাতায় থেকে গেলেও পারতাম সেই বছর কিন্তু আমার মায়ের ইচ্ছে বাঙালি মেয়ে ঘরের বউ করে আনবেন। কলকাতার মেয়েরা নাকি ঘর করার মত নয় তাই তিনি খাটিঁ বাঙালি মেয়ে খুজেঁ দেখছেন। সেই উদ্দেশ্য নিয়েই সেবার পুজোর আগেই বেড়াতে যাওয়া। আমার মায়ের সব জায়গাতেই একটু বাড়াবাড়ি কিন্তু এই ব্যাপারে আমি কিছুই বলতে পারব না কারন আমার মা ভীষন কষ্টে আমাকে মানুষ করেছেন। বাবা মারা যাবার পর আমাদের যে পারিবারিক এসেট ছিল তা প্রায় নিলামে উঠে যেত যদি না মা দেখভালের জন্য নিজে কিছু না করতেন, বিধবা এক মহিলা সাথে ২টো সন্তান নিয়ে জীবন সং গ্রাম করে করে অল্প বয়সেই যেন বেশি বুড়ো হয়ে গেছেন। আমার ছোট এক্ টা বোন  আছে কলকাতায় রবিন্দ্র ভারতি তে পড়ছে। তার চোখে এই বয়সেই চশমা !! দেখে মনে হয় কত বড় বিদ্দান! অল্পে পেকে যাওয়া এই মেয়ে আমার বউ নিয়ে আমার চে স্বপ্ন দেখে বেশিই ......
সে যাকগে! চোখ জোড়া যার তার কথায় আসি। বাঙালি মেয়েরা এখন আর আট পোরে জীবন যাপন করে না তা আমি বেশ জানি কিন্তু এই চোখের অধিকারিনির স্বভাব  একে বারেই ভিন্ন। বলা যায় আজকালের মেয়েরা যেখানে পিজা হাট আর ফেস বুকে অভ্যস্ত এই যুগে সে মোটা মোটা বইয়ের ভেতর বাস করতে অভ্যস্ত। আজব লেগেছিল তাকে যখন আমি তার সাথে ১ম পরিচিত হই। কে এখন রবিন্দ্র ভাল বাসে?? কিন্তু এই মেয়ের রুচির সাথে আমার কোন কিছুই মেলে না আমি পছন্দ করি ডিস্কো আর সে বই, আমি পছন্দ করি হইচই আর সে যেন নিভৃত চারিনি।  আমার চাওয়া আর তার চেতনার কোন মিল ই পাওয়া যাবে না। এর পরেও অজানা এক আকর্ষনে আমি তার কাছে চুম্বকের মত ছুটে যেতাম। তার মায়া ময় চোখ আর হাসি দেখার জন্য ।এক নজর  আড়নয়নে দেখতে ছুটে যেতাম বাংলাদেশে ... তার আসল নাম যাই ই হোক   কিন্তু আমার কাছে সে ছিল মায়া।
মায়া! আসলেই মায়া ময়ী সে রাতের জোছনার আলোয় হলদে বরন মায়া আলতা রাঙ্গা পায়ে ১জোড়া সেন্ডেল পরে ঘুরত সে। আমায় দেখলেই দে ছুট।
মায়াকে আমি মাসি মায়ের বাড়ীতে ১ম দেখি। মাসি মায়ের নন্দায়ের মেয়ে সে। তার মা বাবা আর এক ছোট ভাই ছাড়া ও বিশাল এক পরিবার তাদের। আমরা যখন মাসি মায়ের বাড়ি যাই তারা মাঝে মাঝে আসত আমাদের দেখতে একবার ত জোর করেই নিয়ে ই গেল। বেশ পরি পাটী বাড়ী ঘর তাদের। এই সময়ে মানুষ যেখানে ফ্লাট কিনে থাকতে ভাল বাসে স্ট্যাটাস মেইন টেইন করতে সেখানে মায়ার বাবা মানে আমার কাকা মশায় থাকেন একতলা এক বাড়ী বানিয়ে,হোক একতলা কিন্তু রুচি আছে উনার। সন্তান্ দের তিনি ভাল শিক্ষাই দিয়ে মানুষ করেছেন তা মায়া কে দেখেই আমি বুঝেছিলাম।হয়ত সেই কারনেই নিজেরই অজান্তে আমি তার প্রেমে পড়ে যাই... আহামরি কোন সুন্দরি সে নয় কিন্তু তার সেই চোখ জোড়া আমাকে টান ত বেশ। আমি জানি আমার মা মায়াকে বউ হিসেবে খুব ই মেনে নিবে কিন্তু সমস্যা অন্যখানে আমিই কনফিউজড হয়ে ছিলাম কারন তার আবেগ ময় কথা বার্তা যেভাবে আমায়  আকর্ষন করত আবার মনের মাঝে ভয় ও উকি দিত কারন আমি আমাকে চিনি। আমার লাইফ  মায়ার চে একদম ভিন্ন। বিয়ে করে এনে যদি আমি ই এই সম্পর্কের মর্যাদা দিতে না পারি তাহলে??  তাহলে আমার আর জীবন বলে কিছুই থাকবে না সাথে মায়ার জীবন টা ও নষ্ট হবে। আমি যখন এই ভাবনায় তখন ও জানতাম না বিধাতা আমার জন্য এর চেয়ে ভয়ংকর কিছু উপ হার রেখেছেন।
মায়ার হেটে যাওয়া তার কথা বলার ভঙ্গি আর  তার  লাইব্রেরির বই যা আমার কাছে ১ম ১ম  শত্রুর চে বেশি কিছু ছিল  কিন্তু আস্তে আস্তে তার অনুপ্সথিতি  আমার ঘরটাকে লাইব্রেরি বানিয়ে দিয়েছে! মায়া আমার সাথে যখন কথা বলে তখন সে বেশির ভাগ কথায় বই এর আলাপ করত যা ছিল আমার কাছে সবচে অপছন্দ। কিন্তু তার বই পড়ার নেশা আর বইয়ের প্রতি ভাল বাসা আমাকে অনেক টান ত কারন সে যখন বই পড়ে গল্পে গল্পে আমাকে বোঝাত বইয়ের চরিত্র গুলো আমি অবাক হয়ে শুনতাম তার কথা! আমার কাছে মনে হত সে যেন  সেই বইয়ের ই নায়িকা! আর আমার  তার প্রতি আকর্ষন বাড়ত।এই আকর্ষন এর কারনে কলকাতা থেকে  কতবার যে মায়ের কাছে মিথ্যে বলা হয়েছে তার ইয়ত্তা নেই কিন্ত এই মিথ্যেই যে এভাবে আমার জীবন পালটে দিবে ভাবিনি।
মায়াদের বাড়ীতে যতদিন থাকা হয়েছে সেই দিন গুলি আজো মনে পড়ে। মায়ার বাবা এক্স সরকারি কর্মকর্তা,মা গৃহিনি। মায়ার ভাইটি দেখতে বেশ, ওর নামটা আজ ঠিক মনে আসছে না পরে মনে এলে জানাব  ও হা মনে এসেছে দিব্য। দিব্য ভারি দেখতে ছোট খাট গোল চেহারার দিব্য আমার সাথে বেশ শখ্যতা হয়েছিল। যতবার আমি কলকাতা থেকে যেতাম সে ছিল আমার সঙ্গি। বেশ চালাক ছোক্ রা সে আমায় প্রশ্ন করেছিল কোন একদিন দাদাভাই তুমি কি আমার দিদি কে ভাল বাস? আজ কালের ছেলে সেও খুব অল্পে বুঝেছিল কিন্তু যার বুঝার কথা সে ছিল উদাসীন!!
একদিনের ঘটনা ।।আমি আমার ঘরের দরজা হতে বেরিয়ে মায়ার ঘরের সাম্ নের বারান্দায় দাড়িয়ে আছি এমন সময় মায়া হঠাত আমার সামনে এসে দাঁড়ায়, কোন ভয় ছাড়াই বলে আচ্ছা আমাদের বাংলাদেশ কি আপনার বেশ পছন্দ? আমি এক টু অবাক হই যে মেয়ে এত দিনে এক বার ও আসেনাই কথা বলতে সে কিনা এখন সরাসরি আমার সামনে আমাকেই প্রশ্ন করছে আমি একটু অপ্রস্তুত কিন্তু কথা বলার সুযোগ আমি খুজেঁছিলাম এতদিন তা আজ পেয়েছি সুত রাং এটা আর ছাড়া যাবে না।আমি ও তাই কথা শুরু করলাম। জি হ্যা আমার খুব ভাল লাগে বাংলাদেশ!কল কাতার যান্ত্রিক জীবনে যখন বিরক্ত হয়ে যাই তখনি বাংলাদেশের টানে চলে আসি অন্যরকম মায়া আছে।
 অহ।। মায়ার এই অহ বলার ধরনটাই আমাকে আকর্ষন করেছে সেদিন। আমি তার কাছে জানতে চাইলাম আপনি কি সব সময় ই লাইব্রেরি তে... এই কথা শেষ হবার আগেই সে মুখ ফিরিয়ে বলে চলি পরে আলাপ করব। তার এই ইগ্নোর আমার আতেঁ ঘা এর মত লেগেছিল সেইদিন কারন আমি খুব আগ্রহি ছিলাম আলাপে কিন্তু সেই কথা আর বলা হল না।আম রা যখন কলকাতায় ফিরে আসছি তার আগের দিন।
আমি লাইব্রেরি ঘরের দিকে ঘুরছি দেখার চেষ্টা মায়া আছে কিনা...হঠাত আমার হাত কে জানি ধরে দিয়েছে টান আমি ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি মায়া! একেবারেই ধরা খেয়ে মুখ কাচুঁ মাচুঁ করে আমতা আমতা করে বললাম আমি শুধু দেখার চেষ্টা করছিলাম ভেতর টা কেমন। আমার অবস্থা দেখে বলে আসুন আমার সাথে, আমি একটু থ খেয়ে যাই কিন্তু ভেতরে গিয়ে দেখি অন্যরকম.আমি জানতাম না লাইব্রেরি এইধরনের হতে পারে! আসলে লাইব্রেরি না বলে বলা যায় এক টা বিশাল বাগান এক পাশে সবুজ গাছের নিচে বসার পার্কের মত জায়গা, আরেক দিকে এক চিলতে লাইব্রেরির মত গোছানো বইয়ের স্তূপ।  আমি অবাক হই কি নান্দনিক  আসলে বাঙালি পরিবারে এই সব দেখা যায় কিন্ত এই রকম বিচিত্র চিন্তা কার খুব জানার ইচ্ছে হল যে লাইব্রেরি কে বাগানের ভেতরে অবস্থান দেয়া! আমি বইপ্রেমি নই কিন্তু  আসলেই সেদিন অনেক ভাল লাগছিল এর অন্যতম কারন মায়ার স্পর্শ! মিথ্যা বলব না আমি আমার জীবনে আমি এইরকম ভিন দেশি পরিবেশে অদ্ভুত চিত্ত ভোলানো মানুষ দেখি নাই।মায়া যেন সত্যি আমায় মায়ার জালে বেধেঁছিল।  আমি ভাবছিলাম আমার মায়া  আমায় ছাড়া  আর কেউ ভাল বাসবে না কিন্তু সত্যি টা জানলাম পরের বার যখন তার কাছে নিজের  মনের কথাটা জানালাম তখন জানলাম সে বিবাহিতা! জীবনের ১ম ভাল বাসায় আমি ধাক্কা খেয়ে গেলাম।
আমার মন কোন ভাবেই মেনে নিতে চাইছে না আমার মায়া আমার নয়। তার সেই ভুবন ভোলানো হাসি আর বইয়ের ভাষায় কথা বলা আমাকে চরম ভাবে আঘাত করছিল। আমি নিজেকে ব হু বার বোঝাতে চাইলাম যে এটা আমি কিভাবে করলাম??
মায়া আমি জানি আজ আমি যখন তোমার কথা লিখছি এই ডায়েরীতে সেই সময় গুলির কথা তখন তুমি অনেক কাছে থেকেও দূরে !

আমি মায়া!!  অল্প বয়সে আমার বিয়ে হয়। যাকে বলে বাল্য বিবাহ! আমার বয়েস যখন ৭ তখন আমার বাবা মা আমাদের গায়েঁ বেড়াতে গেলে আমার  দিদা আমাকে দেখেই আমার বিয়ে ঠিক করেন,অনেক জোর  করার পর ও আমার বাবা মা কোন ভাবেই বিয়ে ঠেকাতে পারেন নাই। আমাদের পরিবার অনেক উচ্চশিক্ষিত হলেও কি  হবে দিদার জোরের কাছে সবাই যেন হার মানে। আমার বিয়ে হয় গায়ের এক মাস্টারের সাথে। বিয়ে দিয়েই আমার শশুর মশাই আমায় নিয়ে যেতে চান কিন্তু আমার বাবা জোর না করে বুদ্ধি করে আমায় শহরে নিয়ে আসেন আর কোন্দিন গায়ে যান নাই। বাবা ভীষন কষ্ট পান তার মায়ের এই আচরনে মাকে কিছুই বলেননি সেদিন কিন্তু আর ক খনই তিনি বাড়ি যান নাই বরং বাড়ির সাথে সকল সম্পর্ক আমার কারনে ছিন্ন করে শহরের বাড়ি পর্যন্ত বদল করে ফেলেন। কিন্তু আমার যে বিয়ে হয়ে গেছে এই ব্যাপার টা আমার আত্তীয় সব্জনের কাছে জানা হয়ে যায় সেই কারনে বাবা আমাদের নিয়ে অনেক দূরে চলে আসেন। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস এই যে আমি যে বিবাহিতা তা আমার বাবা  বা মা কেউ ই এই সমাজে সবীকার করতে চান না যদিও আমি এই বিষয় টা এড়িয়ে যেতে এখনো ভয় পাই। আমার চোখের সামনে ভেসে উঠে একটা অচেনা লোক আমাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে কূন্ড পাকানো অগ্নির দিকে আমি অবাক হয়ে ভয়ে মা মা করে চিৎকার করছি। কিন্তু দিদা আমায় টেনে লোক টার সাথে বসিয়ে দেয়। বাবা তার মায়ের কির্তি দেখে চিৎকার করে বলতে থাকে মা তুমি এইসব কি করছ? গায়ের লোকের ভয় দেখিয়ে দিদা বাবা কে থামায় কিন্তু বাবা পুলিশে খবর দিতে চাইলে দিদা বাধা দেয় এক সময় পুলিশ আসে কিন্তু ততক্ষনে যা হবার তা হয়ে যায়। পঞ্চায়েত অনুযায়ি আমার বিয়ে নাকি হয়ে গেছে। আমি অবাক হয়ে থাকি সেদিন অল্প বয়সের আমার মাথায় ই ঢুকল না বিয়ে কি? কিন্তু আমায় জোর করে তুলে দিতে চাইল সবাই সেদিন। বাবা তখন তার মায়ের পা জরিয়ে ধরে বলল মা আজ আমার মেয়ে আমার কাছে থাক সে বড় ভয় পেয়ে গেছে ।দিদার সেই নিঠুর চেহারা আমার আজো মনে পড়ে কিভাবে যে তার উপর ভগবানের কৃপা হয়েছিল জানি না বাবার কথায় বলে দিল সন্ধে নাগাদ বর যাত্রি আসবে আমায় নিয়ে যেতে, কিন্তু বাবা আমার সেদিন অনুনয় করে এক রাত শেষ বারের মত থাকার অনুরোধ করায় জানে বেচে ছিলাম সত্য কিন্তু আমার হ্রদয়ে সেই দাগ রয়ে গেছে আজো। আমার জীবনের মাঝে এই দাগ আমায় এত দূরে নিয়ে যাবে আমি ভাবিনি কখনো। ভাবিনি এক দাগ আমায় একটু একটু করে জীবত থেকে ও মৃত করে ফেলবে আমার সব আশা আনন্দ কে আধারে ঢেকে দিবে আমি ভাবিনি। আমার ধারনা ছিল আমি আবারো সাভবিক লাইফে ফিরে আসতে পারব কিন্তু আমি জানতাম না এটা আমার জীবনে দাগ হয়ে যাবে। আর আমি হারিয়ে ফেলব আমার  আশা ভরসা আর স্বপ্ন!!!
 আশা নাকি মানুষ কে  বা চিঁয়ে রাখে কিন্তু আমার তো কোন আশা নেই। বিয়ে হচ্ছে প্রতিটা মেয়ের জন্য সবপ্নের মত শুধু মেয়ে নয় ছেলের জন্য ও হয়ত! কিন্তু আমার জীবনে সেই স্বপ্ন থেকেই গেল অধরা হয়ে! হয়ে রইল আমার জন্য মায়ার মত যার কোন ফিনিশিং লাইন নাই শুধু সপ্ন ই আছে আমার , বাবা আমায় সেদিন নিয়ে আসতে সমর্থ হয়েছিল সত্য কিন্তু যে দাগ আমার হয়ে গেছে আমি তা কিভাবে ঘুচাই?? আমার নাম এর সাথে জুড়ে আছে সেই অদেখা সেই মানুষ যাকে আমি অনেক ছোট থাকতে দেখেছি বরের বেশে আমার সাম্নে।আজ ১২টি বছর আমার সব কিছুই যেন চেঞ্জ কিন্তু আমার জানা নাই আমার সেই মানুষ টা বেচে আছে না মরে গেছে আমার ফ্যামিলি থেকে কোন দিন ই তার খোজঁ নেয়া হয়নাই। কারন আমার ভাল এর জন্য আমি জানিনা আমার এই অভিশপ্ত জীবনে আমি আর কোন দিন তার দেখা পাব কিনা। আজ ১২টি বছর আমি তার আশায় বসে আছি হয়ত সেও ভুলে গেছে আমায়। আমার বাবা বড় প্রগতিশীল মানুষ তাই তার কথা হল অইসব ছাই পাশ নিয়ে ভেবে লাভ নাই জীবন চলে যাবে ওসব ভেবে।    কিন্তু আমার কষ্ট ?তার কি হবে? আমার জানা নাই আমি কি ভাবে ভুলে যাব সেই ভয়াল রাত কে? আমার চাওয়া গুলো আমাকে দেখতে হবে ত।আমার বাবা আমায় শিখান আমি যেন এই কথা ভেবে হতাশ না হই আমি যেন হার মেনে না যাই। আমি শিখেছি কিন্তু এই সমাজ তার শিক্ষার আবরনে আমায় আবার শেখায় আমি স্বামী পরিত্যাক্তা। তাদের মত করে আমাকে ভাবায় আবার ও। কেন আমি এইরকম হলাম ??এর কোন জবাব নেই কারো কাছেই। বাবা চাইলেই আমায় সেই বাল্যবিয়ে সবীকার করে নিতে পারত কিন্তু আমার বাবার চোখে তা ছিল অন্যায় যে কারনে বাবা দিদার মৃত্যর সময় ও খবর জেনেও যাননি। আমরা বলে কয়ে ও পারিনি কারন বাবা তার মাকে সেইদিন যেভাবে অনুনয় করেছিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না কিন্তু আমায় বাবা বাচাঁতে পারেন নাই সেই বালিকা বধু হতে! কিন্তু সেই সংসার আমার করতে ও তিনি দেন নাই। আমার মা অবশ্যঅনেক বার বলেছিল মেনে নিতে কিন্তু বাবার এক কথা তিনি কিছুতেই এই বিয়ে মেনে নেবেন না তাই ই হল। কিন্তু আমার বয়েস যখন বাড়ল বিয়ের বয়স হল তখন বাবা কে বেশ চিন্তায় দেখা যেত। তার চোখে শুধুই চিন্তার ছাপ কিন্তু আমায় তিনি তা বুঝতে দিতেন না। বইয়ের মাঝে আমায় ডুবিয়ে দিলেন. আমি জানিনা আমার কি হল ? আমি হারিয়ে গেলাম কিন্তু অনিন্দ্যের ভাল বাসা আমাকে আবারো জীবনে এনে দিল রঙের ঘনঘটা! অনিন্দ্য আমার জীবনের সেই রঙের মেলা  যার হাতটা আমি ধরে রাখতে চাইছিলাম। প্রেমে না পরলে কেউ বোঝে না আসলে কি মায়া এর।  আমি অনিন্দ্য কে পেয়ে বুঝেছিলাম যে হা আমি হয়ত আমার সম্পদ পেয়ে গেছি!কিন্তু তা আগলে রাখার সামর্থ্য যে আমার নেই ! আমি চাই ছিলাম সে আমায় ছেড়ে না যাক কিন্তু আমি এই আমি ই তাকে ছেড়ে দিয়ে চলে এসেছি কারন ভাল বাসার মানুষ কে আক ড়ে ধরে রাখার মত সাহস আমার নেই! life is so much crazy!ইংরেজি সাহিত্যে রোমিও কে যেভাবে তার জুলিয়েট আকড়ে ধরতে পারে নাই আমার দশা ও তাই! আমি জানি অনি মানে অনিন্দ্য আমাকে অনেক ভাল বাসে কিন্তু আমার পক্ষে তাকে ভাল বাসা অন্যায়! নিজেকে বড় ই ছোট মনে হয়!।বাঙালি মেয়ে আমি! আমার হ্রদয়ে কারও জন্যি ভাল বাসা থাকতে নাই আর থাকলে ও ভয় হয় আমি যদি ছোট হয়ে যাই! কারন আমি ত বিবাহিতা! না হোক সংসার! বাঙালি সমাজে আমার পরিচয় আমি বিবাহিতা! আমার বর আছেন কিন্তু আমি তার দেখা কখনই পাই নাই।  এই ছোটকালের বিয়ে বিয়ে খেলা টা আমার সাথেই কেন হয়ে গেল যার কষ্ট আমাকেই বইতে হচ্ছে! বাবা বড় ই আধুনিক বলে আমি এর আধুনিক চিন্তার সাথে খাপ খাইতে গিয়ে চিরা চরিত নিয়মের বাইরে এসে এখন সমাজ ছাড়া হতে চলেছি! বাবা বলেন সমাজ?কিসের কি? যে সমাজ একটা মেয়ের মতের দাম দেয় না বাধ পর্যন্ত দিল না ধর্মের নামে অধর্ম করে আমার মেয়ের জীবনের ১২টা বাজিয়ে দিল আমি সেই সমাজ এর থোড়াই কেয়ার করি না হোক আমার মেয়ের বিয়ে! আমি হতবাক হই বাবার  কথায়! মুখে আমায় যত সাহস দিন কিন্তু জানি ভেতরে ভেতরে আমার এই সাহসি বাবা বড়ই চিন্তিত! এক পশলা বৃষ্টি তে যদি আমার সব কষ্ট মুছে যেত!

পেন্নাম! আমি দিব্য! আমার জন্মের আগে আমার বাবা আমার নাম ঠিক করেছিল দিব্য! আমি হলাম মায়া দি' র ছোট ভাই। দি আমায় বড় ই আদর করে  সেই সাথে অনি দা ও! অনি দা মানে আমাদের অনিন্দ্য দাদা। দাদার সবচে যে জিনিস টা আমার বেশি ভাল লেগেছে তা হল আমায় দাদা  তার ছোট ভাইয়ের মত ভাল্ বাস ত। কিন্তু আমার জানা ছিল আমার দাদা আমার মায়া দিয়ের প্রেমে পড়েছিল। আমি দিদি কে প্রশ্ন করেছিলাম দাদা সেই খবর জান ত না। দিদি আমায় শুধু ই বলেছিল দিব্য তুই যেদিন বড় হবি সেইদিন এইসব বুঝবি এখন না। ও হা আমার নামের অর্থ টা বলা হয় নাই কথায় কথায় অন্য দিকে চলে গিয়েছিলাম। দিব্য শব্দের অর্থ নাকি অজানা বিষয়ে জ্ঞানী মানুষ বাবা নাম টা যে ঠিক রেখেছিল তা আমি বুঝেছি। দিদি তার প্রিয়ের জন্য কাদঁত নিরবে! কিন্তু অনিন্দ্য দা কে দেখলে ই এমন ভাব করত যে সে পৃথিবির সব চে বড় অন্যায় কাজ করেছে মায়া দি কে ভাল বাসায়! মেয়েদের যে ভগবান কি দিয়ে বানিয়েছে তা তিনিই জানেন একদিকে চোখের পানিতে বুক ভাসায় ফেলবে আর অন্য দিকে নিরবে কাদবে! শুনেছি এক মাত্র  এই দেশের মেয়েরাই কাদেঁ সবচে বেশি! ভাল বেসে ও কাদেঁ আর ভাল না বাস লে ও কাদেঁ। তাদের কান্নার যেন পানির ট্যাঙ্ক আছে!যাই হোক দিদি ত তার মনের কথা বলবে না জানতাম আমি,সুত রাং আমাকেই কিছু করা লাগ ল। আমি একদিন অনি দা কে প্রশ্ন করেছিলাম সরাসরি । বয়েসে আমি ১৪বছরের হলে কি হবে তাদের দুজনের নিরব প্রেমের আমিই এক মাত্র সাক্ষি! আমার বন্ধু পিপ্লু আর সোমেন তারা আসত আমাদের বাড়ি, যেহেতু বাবা মায়া দি এর ১ বারের বিয়ে নিয়ে বড় ই চিন্তায়।আমি অবশ্য সেই সময় ছোট ছিলাম আমার দিদা নাকি আমার বাবা কে হুমকি দিয়েছিল শুনেছি, যা হোক আমার কথা ত হল এবারে আসি মুল কাহিনিতে! আমি অনি দা মানে আমাদের নায়ক অনিন্দ্য দাদা কে বাংলাদেশে আসার জন্য চিঠি দিলাম! যদিও এই সময়ে ইমেইল বলে তাহাকে আমি বলি চিঠি। দিদির ভাষায়! আমার দিদি অবশ্য ওল্ড ফ্যাশনের মানুষ তাহাকে আপনি কোন্ দিন ই ইমেইলের তাৎ পর্য বুঝাতে পারবেন না! তার ভাষায় এই  ইমেইলে নাকি মানুষের মনের মমতা ভরা চিঠির কোন মুল্য থাকে না হারিয়ে যায় । যা হোক এই ওল্ড ফ্যাশ নের মেয়েকে কিভাবে অনিন্দ্য দাদা পছন্দ করেছে তাই বলছি......... আমার দিদি আমার অনিদা এর প্রতি দুর্বল ছিল। কিন্তু আমার দিদি তা কখনই বলত না! দিদি ত জান ত ই যে অনিন্দ্য দাদা দিদি কে ভাল বাসে কিন্তু দিদির  ভয় যদি কোন দিন তার বর চলে আসে তার খোজেঁ তাহলে? দিদি কে এই কথা কে বুঝাবে যে অনিন্দ্য দাদা ই সেই লোক সেদিন যে লোকের সাথে দিদি কে বিয়ে দেয়া হয়েছিল শোনা কথায় সবাই চলে যায়। অনি দার মার ইচ্ছে ছিল অনিদা কে বাল্য বিয়ে দিয়ে তিনি অল্প বয়সি মেয়ে আনবেন।সেই কারনেই অনেক লুকোচুরি করেই বিয়েটা দেয়া হয়। কিন্তু আমার বাবা সব কিছুতে দিদা কে ভুল বুঝেন বিয়ের মন্ডপে অন্য এক লোক কে দেখে ই ভাবেন তার মেয়ে কে তার মা জোর করে বুড়ো এক লোকের হাতে তুলে দিয়েছেন। সেই থেকে যে বাবা দিদার সাথে সম্পর্ক শেষ করল তা আর বলতে! বাবা দিদার নাম ই শুনতে পারেন না আর আমি ত এখন বড় হয়েছি তাই আমি বলছি দিদা ছিল নিরপ রাধ মাঝের থেকে আমার বোন এতগুলো বছর কষ্ট পেল। হা জানি অনেক বছর হয়ে গেছে এই বিয়ের কিন্তু অনিন্দ্য দাদার ত বলা উচিত ছিল দিদি কে। দাদার সাথে যখন আমার শেষ বার দেখা হয় যেবার তাকে বাংলাদেশে আস্ তে বললাম তিনি বললেন আমি গিয়ে আর কি করব তোর দিদি ত আমাকে চায় না সে ত তার বর এর আশায় বসে আছে। তাদের ১ম দেখা হয়  আমার মামার বাড়ি।ঘটনা চক্রে হোক আর বিধাতার ইচ্ছেই হোক তারা যে দুজন এক পথ এর প থিক তা আমি জেনে যাই কিন্তু মজার ব্যাপার হল অনিদা বা তার পরিবার এর কেউ ই এই ব্যাপারটা নিয়ে মুখ খোলেনাই। আজব তাদের দেখা হয়েছিল কাকতালীয় ভাবে কিন্তু সত্য কথা টা কি অনিদা ও জান ত না? আমি যখন জানতে পারি দাদা কে কোলকাতা গিয়ে ধরি যে কেন সে এই কাজ করছে দিদি কে কেন বলছে না যে অনিদা এ সেই মানুষ। তার কথা ছিল তোর দিদি আমাকে জানে অনিন্দ্য বলে কিন্তু জানে না আমি ই সেই অভাগা যার সাথে তাকে বিয়ে তার দিদা দিয়ে ছিল। কিন্তু যেদিন জানবে আমাকে কি গ্রহন করবে??! আমি হত বাক হই। বললাম তুমি ও দেখছি আমার দিদির মত হয়ে গেছ তার মত করেই কথা বলছ!! এই কটা দিনেই এত টা মাখন ! এত পয়সা খরচা করে দিদি কে দেখতে আস বার বার বাংলাদেশে নিজের কাজ কর্ম ছেড়ে তুমি এখানে এসে পড়ে থাক মাসের পর মাস দিদিকে দেখে চলে যাও।কিন্তু কেন বল না যে তুমি ই সেই! আমার কথায় তার চোখের কোনে এক ফোঁটা জল! জানি ছেলেরা কাঁদে না কিন্তু অনিন্দ্য দাদা সেদিন দিদির জন্য কেদেঁছে!! তার কথা ছিল তোর দিদি আমায় ভাল বাসে কিন্তু তার স্বামী অনিন্দ্য কে সে ঘৃনা করে!! কি!! তুমি কিভাবে বুঝলে?? সেদিন লাইব্রেরী তে যখন বসে কফি খেতে খেতে আলাপ করছিলাম তখন ই সে বলে আমি সেই মানুষ টা কে ঘৃনা করি! যার কারনে আমি বাড়ি ছাড়া দিদা ছাড়া সব ছেড়ে বনবাসিনীর মত জীবন যাপন করছি। আমি থ! এই হল কাহিনি। দাদা জানতে পেরেছিল যেদিন সে আমাদের বাড়ি বেরাতে আসে সেইদিন ছবি দেখেছিল আমাদের সবার।ছোট কালের ছবি দেখে ই দাদার মাথা ঘুরে যায় বুঝে যায় তিনি যে মায়ার খোজঁ করছিল সেই আমার দিদি মায়া! ঘটনা জেনে ও দাদা চুপচাপ কলকাতা ফিরে যান! ১২ টা বছর এই ভাবে!আর যখন পেল তখন দাদা পেয়ে হারাতে চাইছে!!!!!!!!!!!! আমি জানতে চাইলাম এইটা কি হচ্ছে  দাদা! বিয়ে হয়েছে এটা ত সত্যি! দাদার জবাব আমি তার কাছে একজন অপরাধি !এর ক্ষমা যদি সে না করে আমি আর ফিরব না বাংলাদেশে! ভুলে যাব সব ই। আমি বল লাম তুমি কি ভুলে যেতে পারবে? দাদা চুপ ছিল। দিদি হয়ত জানেই না কিন্তু তুমি ত জান তুমি কেন এই ভাবে পিছিয়ে আসছ! তার কথা হল সে আমার শুধু অর্ধাঙ্গি ই নয় সে আমার তার চে বেশি কিছু! আমি  বুঝলাম দিদির সাথে থেকে এর মাথা গেছে! আমার মাথায় শুধু এই কথায় এসেছে যে এদের এক করা প্রয়োজন নয়ত দুজনে ঘর না বেধে এই ভাবে কাটিয়ে দেবে কিন্তু একসাথে হবে না!পৃথিবিতে এইরকম মানুষ ও আছে তা আজ নিজ চক্ষে দেখলাম।আমার ইচ্ছে করছে দাদা কে ধরে বেধে বাংলাদেশে আমার দিদির সাম নে দাঁড় করিয়ে দেই কিন্ত আমার কেন যেন মনে এল যদি বিধাতা তাদের এত বছর পর এক সাথে একে অন্যের সামনে দাড়ঁ করাতে পারে তাহলে আমি ত তাদের জোর করতে পারি না। কিন্তু এক ক্ষনে মনে এল বিধাতা সুযোগ যখন দিয়েছেন তাহলে কিছু ত করতেই হয়! কিন্তু কিভাবে?? বন্ধুরা তোমরাই বলে দাও এই ২ প্রেমের পাগল কে কিভাবে মেলাব? গত সপ্তাহে অনিন্দ্য দাদা কে মেইল করেছি আমি। লিখেছি দিদি বিয়ে করছে। দাদা কিছুতেই মানতে চাইল না যে দিদি বিয়ে করতে পারে তাকে ছাড়া!।আমি লিখ লাম আজ কাল দিদি আগের মত নেই, তার কথা বার্তা সব পরিবর্ত্ন হয়ে গেছে । অনিন্দ্য দাদা আমার কথা বিশ্বাস  করল না! বলল আমি জানি সে এই কাজ ক খন ই করবে না। আমি ত আনন্দে আত্ন হারা! যাক বেটা নড়ে চড়ে বসেছে। আমার এই কুবুদ্ধি যে কাজে আসবে আমার জানা ছিল কিন্তু  আমার এই মিথ্যেই সত্যি হয়ে গেল! বাড়ী ফিরে এসে জানতে পারি দিদির সত্যিই বিয়ে !!! আমার বাবা তার জন্য পাত্র ঠিক করে ফেলেছে! হায় বিধাতা! তুমি এ কি শুরু করলে! যখন তাদের এত টা বছর পর মিলিয়ে দিলে তাহলে এই সব কি জন্যি! কি পরিক্ষায় আবার ফেলছ আমার দিদিকে!!!! আর দিদি ! সেই বা কিভাবে রাজি হয়ে গেল! মাথা মুন্ডু কিছু বোঝার উপায় নেই সুত রাং চললাম দিদির কাছে!!!!!!!!! সেই সব জানে।I know di you love onindo but why you refused him??দিদি আমার ইংরেজি শুনে থ! বলে তুই কিভাবে জানিস আমি অনিন্দ্য কে ভাল বাসি। দিদি আমি জানি তুমি অনিদা কে ভাল বাস।কিন্তু তার কাছে তা না বলে তুমি আরেক জন কে বিয়ে করছ?? কেন?? দিদি তখন অঝোর ধারায় কাদঁতে শুরু করে!ইশ বাঙালি মেয়ে! খালি কাদেঁ  এই যামানায় ও ! আমার বিরক্তি দেখে দিদি চোখ মুছে বলে আমি ত বিবাহিতা ! তো?? আমার উত্তর এখন তুমি কারে বিয়ে করছ? তুমি বিবাহিতা হয়ে অন্য কাউকে বিয়ে করছ না এখন?? দিদি চমকিত! আমার কথা শুনে! কি বলছিস ছোটন!আমি বিয়ে করছি!!! তুই কার কাছ থেকে এসব শুনে আসলি?? আমার কথায় দিদি যেন আকাশ থেকে পড়ল! আমার আক্ষেপ দি তুমি এত ন্যাকা কিভাবে সাজ? অনিন্দ্য দাদা তোমায় ভাল বাসে সে আমায় বলেছে! মিথ্যে কথা যদি সে বলত তাহলে আমার কাছে বলত!  দিদি তোমায় কিভাবে বলবে সে বল?তুমি ত তোমার সেই বাল্য বিয়ে নিয়ে এখনো আক্ষেপ করছ! তোমার যদি সত্যি জামাইবাবুর প্রতি টান থাক ত তাহলে এত দিনে কি তুমি তার খোজঁ করতে না?? এমন সত্যে আমার দিদি যার পরনাই বিব্রত! আসলে দিদি তোমার ভাল বাসায় খাঁদ আছে গো! তুমি কিভাবে বাবার কথায় এতটা বছর চুপ থাকলে! এক টা বার ও জিজ্ঞেস করলে না তোমায় কার গলায় তুলে দিল দিদা! তখন এর কথা বলছি না আমি আজ কের কথা বলছি! এক অন্যায় থামাতে গিয়ে আর এক টা অন্যায় কে তুমি প্রশ্রয় দিচ্ছ না?? মাঞ্ছি তোমায় বালিকা বুয়সে বিয়ে দেয়া হয়েছে কিন্তু এখন? এখন ত তুমি সাবালিকা!
আমার এমন কথায় দিদি চুপ! আমি বলেই চলেছি দিদি তুমি ত কাউকে ই আটকে রাখলে না ,না অনি দা না তোমার সবামী! তার চোখে শুধুই জল!
আমার কথা শেষ দিদি ।তোমার কারনে অনিন্দ্য দাদা সব ছেড়ে দিয়ে পাগলের মত বাড়ি ছাড়া হয়ে আছে,তোমার ই কারনে বাবা চিন্তায় চিন্তায় অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে,আমি এক মাত্র দিব্য যার এখনো বয়েস হয়নি ভেবে তুমি বাবা মা সবাই মিলে আমায় সব কিছু থেকে দূরে রাখছ কিন্তু আমি ত বুঝি এই সংসারে তোমার চিন্তা করতে করতে আমার কথা সবাই ভুলে গেছে।আমি আজ তোমায় সার্থপর বলছি দিদি তুমি সার্থ পর বড় ই সার্থপর।তোমার এই ভাল বা সা ভাল বাসা খেলা বন্ধ কোর দয়া করে!
চুপ কর দিব্য! চিৎকার করে উঠল আমার শান্ত দিদি ,মায়া দিদি কে এই রুপে  দেখে আমি নিজেই ভয় পেয়ে ছিলাম সেইদিন ! আমার উদ্দেশ্য যা ছিল তা তো হল কিন্তু তার যে চেহারা আমি কোন্ দিন দেখিনি তাও দেখা হল আমার! আমি মনে মনে ঈশবর কে সবরন করছি যে এই কথা বলার পর সে যে রি এক্ট করেছে তা যেন বারুদে পরিনত হয়! হল ও তাই। আমাকে চড় দিয়ে সে তার রাগ ঠান্ডা করল! এর পর যা বলল তার অর্থ দাঁড়ায় হ্যা আমি তোর অনিন্দ্য দাদা কে ভাল বাসি বেসেছি! আমি ত শুনেই খুশি কিন্তু আসল কথা হল সে দাদা কে মানাচ্ছে কিনা!
শোন দিব্য আমার জীবনে আমার বাবার মুল্য সব চে বেশি ।তুই যে বললি আমি সার্থ পর তা ঠি ক নয় আমাকে যেভাবে তোরা বিয়ে দিয়েছিস সেইভাবে আমি মেনে ছি তোদের সব কথা কিন্তু আমার কথা তোরা কেউ কি ভেবেছিস?? তুই আজ আমার ভাই হয়ে অনিন্দ্য এর উকালতি করছিস কিন্তু এক টা বার কি ভেবেছিস আমার ভেতরে কি যাচ্ছে??আমার মনের উপরে কি ঝড় বইছে?? তুই কিভাবে পারলি আমার সার্থ পর বলতে দিব্য? বুঝেছি আজ তুই বড় হয়েছিস তাই তোর মনে অনেক প্রশ্ন। বলছি তোকে সব। সেইদিন বাগানে আমি যখন অনিন্দ্য কে প্রশ্ন করেছিলাম তার জীবনে কি সবচে প্রিয়? তার কথা ছিল তার জীবনে তার যে লাইফ স্টাইল সে মেইন্টেইন করছে তাকে প্রায়রিটি দিয়েছে সে। আমি একজন বিবাহিতা এই সত্য জানার পর সে আমাকে ভাল বাস লে সরাসরি বলে দিত কিন্তু সে এত বার এসেছে এক টা বার ও আমায় বলেনি সে আমায় চায়! আজ যখন কেউ আমার জন্য আমার সব সত্য জেনে সাহস করে দাড়িয়েছে আমার পাশে সেই মুহুর্তে তুই আমায় বলছিস আমি অপরাধী?? যদি ভাবিস তাই তাহলে আমি তাই! কারন বাবা আমায় পন করিয়েছিল যেন আমি কখন ই যেন আমার বিগত জীবন নিয়ে কথা না বলি প্রশ্ন না করি। তুই কি বুঝবি আমার কষ্ট,এক দিকে বাবা আর এক দিকে অনিন্দ্য! আমার মাথা তখন ঘুরছে! এর মানে কি দিদি জানে অনিন্দ্য দাদা ই তার বর!  আমি তার পাশে গিয়ে ক্ষমা চাইলাম! দি আমায় ক্ষমা করে দে! তুই কি জানিস যে অনিন্দ্যদাদা কে?  মায়া দি নিশ্চুপ! এর মানে কি আমি ধরে নেব তুই জানিস! দিদি মাথা দোলায়! আমার তখন মাথা ঘুরছে! দিদি এত অন্যায়!তুই সব জানিস ! মায়া দির জবাব হ্যা আমি জানি অনিন্দ্য এর সাথে ই আমার বিয়ে হয়েছিল। আমি থ! কিন্তু তুই কিভাবে জানিস! যেদিন আমি তার সাথে বাগানে আলাপ করছিলাম সেইদিন ই জেনেছি! কি??????!!!!!!!!!!!!!! আমি দিব্য  ঘুনাক্ষরে বুঝতে পারলাম না?? হ্যা বুঝতে পারিস নাই ।অনিন্দ্য দাদা জানে ?? নাহ সে জানে না আমি যে জেনে গেছি তার পরিচয়! কি বলছ দিদি তুমি??সব জেনে ও তুমি চুপ! বাবার কথা ভেবে?? মায়া দিদি মাথা নাড়ে হ্যা আমি বাবার  কথা ভেবেই চুপ, তুই ই বল আমার পক্ষে কি বাবাকে কষ্ট দেয়া সম্ভব? তার অনেক অনেক আশা আমার জন্য ,দিদা বাবাকে যেভাবে কষ্ট দিয়েছে এর পর আমি যদি তার কথার বাইরে এই সম্পর্ক কে মেনে নেই তাহলে কি ভেবে দেখেছিস বাবা কোন দিন আমার মুখ দেখবে ?? না না ।দিদি আজ কালের মেয়ে হয়ে তুমি এত্ত ভাল কেন? বাবার জন্য তুমি তোমার ভাল বাসা কে ছেড়ে দিচ্ছ?? দিদি আমি জানি অনিদা এর প্রতি তোমার ভাল বাসা আছে কিন্তু এইবার যদি তুমি বিধাতার উপর সব ছেড়ে বসে থাক তাহলে বাবা তার ইচ্ছে মত তোমায় আবার বিয়ে দেবে। না, দেবে না  মায়া দি ইয়ের উত্তর। আমি তার কনফিডেন্স দেখে অবাক। সে বাবাকে কনভিন্স করবে! এও কি সম্ভব! আমি বলে রাখচি দিদি তুমি কিন্তু সত্যের মুখোমুখি হচ্ছ না এ ভারি অন্যয়!!! উদাস হয়ে তাকায় আমার দিকে দিদি  আর বলে যদি আমার ভাগ্যে তোর অনিন্দ্য দাদা থেকে থাকে ত সে আজী বন আমার ই থাকবে পৃথিবী র কেউ আমায় তার কাছে থেকে ছিনিয়ে নিতে পারবে না! এই আমার বিশ্বাস! কিন্তু আমার বাবা মা আর তুই তোদের কষ্টে রেখে আমি ভাল থাকব কিভাবে বল?? আমার ছল ছল করে উঠে দু নয়ন। আমি কেদে ফেলতে গিয়ে ও কাদঁলাম না, সব কিছু ত দিদি বিধাতার উপর ছেড়ে দিয়েছে! বললাম ও না আমি কলকাতায় গিয়েছিলাম আর বলার সেই চান্স পেলাম না। আমার মা দিদি কে নিয়ে গেল তার সাথে। কিন্তু আমার মন কিছুতেই সায় দিচ্ছিল না! এই অন্যায়, এক নারীর জীবনে এই ভাবে এত পুরুষ তার সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়ে যাচ্ছে আর সে মুখ বুঝে সহ্য করে যাচ্ছে এ ভারি অন্যায়, আরেকজন তার ভাল  বাসা কে পাবার আশা ছেড়ে দিয়ে ছে এই অবস্থায় আমার প্লান ফেল করবে এই ভেবে আমি ই আমার জামাই বাবু কে কল কাতায় ফোন দেই বাবা মা দিদি কাউকে না জানিয়েই কারন ভগ বান কোন দিন তোমায় এসে লক্ষি তুলে দিবে না যদি তুমি না চাও আর কাজ না কর! যা বোখার আমি বুঝে গেছি এদের ভাল বাসার পরিনতি সুত রাং বোন বিদেয়ের দায় আমারই......

শত কোটি প্রনাম আপনা দের ! আমার মেয়ের বিয়ে আজ! বিয়ে টা অনেক কষ্টে দিতে হচ্ছে আমায়, ও হা আমার পরিচয় ত দেয়া হল না আমি অতুল প্রধান মায়া র বাবা! আমার স্ত্রী র সাথে ও পরিচয় করিয়ে দেই মায়ার মা রানী দেবী। আমরা আমাদের ১ম সন্তানের বিয়ে ঠিক করেছি। সবাই ব্যস্ত বিয়ের কাজ  নিয়ে আপনার অ আসুন আমাদের এই অনুষ্ঠানে!
পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে মায়ার বাবা মা যখন এই কথা বলছিল আমি মাত্র তাদের কাছ থেকে মিনিট কিছু দূরে আছি। আমার অন্ত রে তখন ছাই চাপা আগুন। আমার পরিচয় পরেই জানবেন ,আজব ব্যাপার হল মায়া কিভাবে এই অন্যায় কে প্রশ্রয় দিচ্ছে!!
বিয়ে বলে কথা ! আজ কতদিন বাদে আমার ঘরে আনন্দ বইছে সবাই প্রার্থনা করুন আমার মেয়ের বিয়ে টা যেন ভাল ভালয় শেষ হয় আর সে ভাল থাকে ... মেয়ে আমার বড় লক্ষী কিন্তু অভাগীর কপালে এমন একটা দাগ পড়েছে তা মুছে দিতে ১২ টা বছর চলে গেল। যাহোক আমি পাত্রকে সব ই জানিয়েছি পাত্র আজকালের ছেলে বড় ভাল কিন্ত তার পরিবার কে সে জানাতে নিষেধ করে দিল কারন তার পরিবার একটু সেকেলে! আমি এতে আপত্তি করেছিলাম কিন্তু আমার সবামী অত কিছু ভাবেন নাই! তার কথা ছেলে যেহেতু রাজি তার পর আর কি আছে। কিন্তু মা এর মন ত মানে না! তার বাবার এক ভুলে আমার মেয়ের জীবনএ অনেক বড় দুর্ঘটনা হয়েছে তাই আমি এই বিয়েতে মত দিতে আপত্তি করছি, কিন্ত মায়া  হটাত তার কি হল জানিনা একদিন এসে বলে মা তুমি কি আমায় আই বুরো দেখতে চাও! আমি ত থ।তোমার আর দিদার কারনে আমি আজ কষ্ট পাচ্ছি তুমি কি চাও আমি আমার বাকি জীবন এই ভাবে কাটাই! আমি বড় আশা করে তাকে বিয়ে দিতে চেয়েছিলাম কারন আমারর বিয়ে ও ওর বাবার সাথে বাল্য কালেই হয়েছে আজ কালের মেয়েরা কেন এত্ত বুঝে আমি তা বুঝি না আরে এত্ত এত্ত পড়ে ই বা কি হবে ঠিক ই ত হেঁশেল ঠেলা লাগবে তার চে ঘরকন্না ক রা শেখ তাইই ভাল সেই কথা আজো আমার মায়ার বাবা কে বলা হয় নাই তার বাবা জানে তার দিদা ই সব নশটের গোড়া!।আমার কারনে মা কে কত্ত অপমান সইতে হয়েছে! আমি তার কাছে মাফ ও চেয়েছি!
যাক বিয়ে যেভাবেই হোক  যার সাথেই হোক মায়া দি ভাল থাক! আমার দিয়ের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল বলছে পাশের বাড়ির এক ভাই সাথে তার ছোট বোন। হঠাত দুরুম করে এক আওয়াজ এল  সাথে চিৎকার এর শব্দ...। কি হল??
আমাদের বলা হয় নাই মেয়ে বিবাহিতা!! বলে উঠল এক বর যাত্রি! ছি ছি ছি এইভাবে বাট পারি করার মানেটা কি ছিল বলুন ত মশায়?? আপনারা গন্য মান্য ব্যাক্তি কিন্তু এত টা নিচে নামতে পারলেন কিভাবে ??আশা করেছিলাম আপনারা আমাদের সাথে এই ধরনের আচরন করবেন না! কথা গুলি যিনি বলছিলেন তিনি আর কেউ  নন বরের বাবা! এই বিয়ে হবে না! বাবা! সাম্য চিৎকার করে উঠল এই বিয়ে হবেই হবে! আমি জানি মায়া বিবাহিতা কিন্তু তার এই বিয়ের কোন মুল্য নেই আমার কাছে কারন সে অশুয্য স্পর্শা! কি বললি তুই? আমি বেচেঁ থাকতে এই বিয়ে  কিভাবে হবে আমি দেখব! আপনারা কিছুই মনে করবেন না আমরা একটু আসছি,এই বলে বর তার পিতা কে নিয়ে অন্যঘরে গেল। বুঝাল অনেক কিন্তু তার পিতা অনড়! ঠিক সেই সময়ে ঘটে গেল আরেক কাহিনি!! দিব্য বলছি অনিন্দ্য দাদা ।। ফোনের অপর প্রান্তে অনিন্দ্য দাদা তুমি এসে দিদি কে সব বলে দাও আর তাকে এই পাপ থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যাও! এক মাত্র তুমিই বুঝবে দিদির অবস্থা! দিব্য তুই কি চাস আমি অপদস্থ হই?? অনিন্দ্য এর জবাব । না দাদা  অপদস্থ কেন হবে তুমি?? তোর দিদি যদি আমায় ফিরিয়ে দেয় তখন?? দিদি তোমায় ফেরাবে না! এই বলেই কাট করল দিব্য ফোন। অন্য  দিকে সব দেখে মায়া বাইরে বেরিয়ে এল... থামুন সবাই। হ্যা আমি বিবাহিতা আমার বিয়ে হয়েছিল বাল্য কালে কিন্তু তার মানে কি আমি পচে গেছি!! একটা মেয়েকে আর কত কাল আপনারা সকলে মিলে অপমান দেবেন বলুন? আমার কি এত টা মুল্য নেই? এক জন আসবেন আবার চলে যাবেন আর একজন বিবাহিতা বলে তার পরিবার কে না জানিয়ে আমায় দয়া করে বিয়ে করতে চাইবেন কেন???? আমই কি রক্ত মাংসের মানুষ নই! মারে তুই চুপ থাক বল উঠল মায়ার বাবা! থাম তোমরা সবাই আর নয় অনেক হয়েছে! আমি কোন পন্য নই যে একজন একজন আসবে আর তার দর দাম করে আমায় ফেলে দিয়ে চলে যাবে! বাবা আমি কি বেশি বোঝা হয়ে গেছি তোমার জন্য যে আমায় বিয়ে দিতেই হবে?? আমি না হয় অন্য মেয়েদের মত নই কিন্তু আমি ত একে বারে অব্লা নই। শুধু তোমাদের দিকে চেয়ে আমি আমার জীবনের ১২ টা বছর নিজের আনন্দ হাসি কান্না সব চেপে গেছি কিন্তু আর নয়! আমার পক্ষে এই বিয়ে বিয়ে খেলা করা আর সম্ভব নয়! আমি পুতুল নই আজ এর কাছে ত কাল ওর কাছে হাত পাতব! আমায় ক্ষমা করবেন সাম্য মশায় আমার পক্ষে আপনা কে বিয়ে করা অসম্ভব! সবার চোখ কপালে উঠল ছি ছি করতে লাগ ল সবাই কিন্তু কোন কিছুর তোয়ক্কা না করে মায়া বলতে লাগল শুনে যান আরো কিছু কথা আমি মায়া আমার জীবন আমার মত করেই চলবে আজ থেকে! আমার জীবনে আজ থেকে শুধু ই আমার ই মুল্য থাকবে আর কারও নয়! কেন জানেন?? আমার মত আপনাদের সমাজের গড়ে দেয়া নিয়মে পুতুল বিয়ের মত করে বিয়ে বিয়ে খেলা মেয়েগুলো যেন  দাড়াতে পারে! আমি আর তোমাদের কারও বোঝা হতে অনিচ্ছুক! না সাম্য না অনিন্দ্য!থ খেয়ে আছে তার কথায় সকলে! আমার কাছে অন্তত আমার নিজের এক্ টা সম্মান ত আছেনাকি আমি তার চে অধম?? দিব্য খবরদার অনিন্দ্য কে জানাবি না আমি বিয়ে যে করি নি আর যদি জানাস তাহলে জেনে রাখ আজ থেকে তোর সাথে মার কোন সম্পর্ক নাই এই বলে মায়া সবাইকে তাড়িয়ে দিয়ে নিজ ঘরে খিল দেয়! এ জেন অনেক দিনের অভিমান মাখা খিল আর খোলার নাম নেই! অন্য দিকে বিয়ে ভেঙ্গে যাওয়ায় সাম্য রীতিমত আপ্সেট জীবনে এক মেয়ে পছন্দ হয়েছিল সে আজ নিজেই বিয়ে ভেঙ্গে দিল কারন একটা ই সত্য কথা পরিবার কে জানায় নি বলে!

এই ঘটনার দিন দুয়েক পর......
 অনিন্দ্য আবার বাংলাদেশে আসেন! সব জানতে পারেন  জেনে দৌড়ে মায়ার ঘর এর দিকে দৌড় দেন কিন্তু বিধাতার কি পরিহাস! সারা বাড়ি খুজেঁ তাকে পাওয়া যায় না  পাওয়া যায় এক টা চিঠি...

প্রিয় অনিন্দ্য...
আমি আমারর জীবনে যাদের সবচে বেশি ভাল বেসেছি আজ তোমাদের জন্য কিছু লিখে যাচ্ছি মন খারাপ কর না তোমরা ।হয়ত বিধাতা আমার জন্য এই ই রেখেছেন! আমি তোমাদের একটা প্রশ্ন করে যাচ্ছি তোমরা কি কেউ চোখ বন্ধ করে বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবে আমায় তোমরা ভাল বাস??
চিঠি পড়েই অনিন্দ্য এর কলজে মোচড় দিয়ে উঠে! হায় কি করলাম! আবারো পড়তে শুরু করল সে
 অনিন্দ্য ...
আমি জানি তুমি আমার সবামী কিন্তু তুমি কি তোমার অহমের উর্ধে এসে আমায় জানিয়েছ তোমার পরিচয়? অনিন্দ্য একটা মেয়ে সারা জীবন অপেক্ষায় থাকে তার আত্তার আত্নীয়ের আমিও ছিলাম! ১২ বছর অপেক্ষায় ছিলাম আমি তোমার জন্য কিন্তু উপ্লব্ধি করলাম তোমার ভেত রে যদি আমার প্রতি ভাল্ বাসা থাক্ ত তাহলে আমায় সম্পদ মনে করে সরে যেতে না! আগলে রাখতে! তাই আমি তোমার কষ্টের কারন হয়ে না থেকে তোমায় মুক্তি দিলাম! আমার  খোজঁ কর না আমি চাই নাই না তউমি আমার খোজে আরো কষ্ট পাও,বাবা মা তুমি তোমরা তোমাদের সমাজ আমায় যে কষ্ট দিয়েছে এর পর আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি বাকি জীবন আর তোমাদের সাথে নয় নিজের মত করে বাচঁব! তাই তোমায় মুক্তি দিয়েছি! অনিন্দ্য  তুমি ভাল থেক! একটা মেয়ের জীবনের সব সিদ্ধান্ত যখন তোমরা ই দাও তখন মেয়েটার ভেতরে কি যায় জানো?? বুঝতে চেয়েছ ? আমার ভাই দিব্য তার বোনের দায় থেকে মুক্ত হতে হয়ত তোমায় বলেছে আমায় নিয়ে যেতে! কিন্তু আমি! আমিও ত একটা মানুষ, ভাবছ আমি কেন চলে গেছি তোমাদের ফেলে! এইসিদ্ধান্তে আমার কারও প্রতি কোন অভিযোগ নাই কারন আমি ত এত বছর পুতুলের জীবন কাটিয়েছি তোমাদের সিদ্ধান্তে আজ না হয় আমার সিদ্ধান্ত ই পূরণ হোক! মেয়ে হিসেবে আজ আমার ভেত রের মানুষ টা কেন যেন জেগে উঠে ছে! আমার নিজেকে আজ বড়ই মুক্ত করতে ইচ্ছে করছে অনিন্দ্য আমার এই চাওয়ায় জানি তুমি বাধা দেবে না!কারন আমি ত তোমার ই মায়া!

এই ভাবে আমার মায়া আমার জীবন থেকে চিরদিনের জন্য হারিয়ে গেল ! আমি আমি অনিন্দ্য চক্রবর্তি আজ বাংলায় বসে আছি! কলকাতা আমার আর ফেরা হল না! কারন আমি যদি কল কাতা চলে যাই তাহলে মায়া কে আর ফিরে পাব না! আজ ১২ টা বছর আমি তার আশায় বসে আছি সে ফিরবে এই আশায়! মায়ার ভাই দিব্য আজ অনেক বড় হয়েছে বিয়ে থা করেছে সে আমার খোজঁ নেয় প্রায় ই...
মায়া তুমি যেখানেই থাক এক বার এক বার ফিরে এসে আমায় ক্ষমা করে যেও! তোমার আশায় আমি কল কাতা ছেড়ে তোমার বাংলায় তোমার দেশে বসে আছি......
আমার এই কাহিনি লিখার উদ্দেশ্য আমার মায়া যেন জানতে পারে আমি তার অপেক্ষায় আছি আজো......
তার সেই লাইব্রেরী আজ অনেক বড় হয়েছে আমি এটা কে আমার জীবনের অংশ করেছি! আমার মায়া আজ হয়ত এই লাইব্রেরি দেখে বলত অনেক সুন্দর! আমি এই লাইব্রেরী কে এত বড় করেছি যে অনেক ভাল বাসার মানুষ গুলো আসে এই লাইব্রেরীতে দেখে তার মায়া ময় চোখ!! মায়াময় বাংলা! যার মায়া আমি আজো ছাড়তে পারিনাই।

Comments

Popular posts from this blog

কুয়াশা

কবিতার ভালোবাসা ......

বঙ্গাসন—গুরুজী