না বলা কথা


কিছু না বলা কথা

চশমাটা খুলে জানালায় পাশে ৫০ উর্ধ  এক মহিলা দাড়িয়ে আছেন,  বাইরে কিছু ছেলেরা ফুটবল খেলছিল। মহিলার নাম আফসানা হক। তার ৩ ছেলে। সবাই বিদেশে থাকেন। স্বামী আজিজুল হক মারা গেছেন আজ ১২ বছর্। সেই থেকেই তিনি একাই ছেলেদের মানুষ করেছেন।আজ অনেক সৃতির মাঝে চোখের সামনে ভেসে উঠছে একটা সৃতি ভার্সিটি জীবনের সৃতি জা তাকে আজও কাঁদায়    


 শহিদ তিতুমির কলেজের ছাত্রী ছিলেন আফসানা।ইন্টারমিডিয়েট  পাস করে কলা বিভাগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন। কিছুই তেমন জানেন না। চোখে হাই পাওয়ার এর চশ মার কারনে সবাই তাকে ৪ চোখ ওয়ালা আফসানা নামেই ডাকত। আফসানা একটু অভিমানিই ছিল তাই  বন্ধুদের কথায় খেপে যেত। বন্ধুরা ও তাকে খেপাতে ভালবাসত। বন্ধুদের  মাঝে সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু ছিল অদিতি। সেই অদিতিই আফসানার জন্যে একদিন কাল হয়ে গিয়েছিল।
আফসানাদের ক্লাসের ভালো ছাত্র ছিল ৩ জন।একজন রাজনীতি করত নাম শফিক রায়হান,আরেকজন আজিজুল হক  সারাদিন আড্ডায় মেতে থাকত কিন্তু রেজাল্ট ভালো করত।আর ১জন রায়হান আহমেদ ,নিরেট গোবেচারা টাইপ। কারো সাথে তেমন মিশত নাহ বরং তাকে পাওয়া যেত লাইব্রেরিতে কেউ যদি তাকে প্রশ্ন করত লাইব্রেরিতে কি কি বই নতুন এসেছে সে অকপটে বলে দিতে পারত কিন্তু তাকে যদি কেউ জিজ্ঞেস করত যে প্রেম করেছ সে বই দেখিয়ে বলত এই তো করছি প্রেম। মানুষ তাকে এক রকম আঁতেলই বলত।
এই ৩জনের চর্চা হত সবখানেই বিশেষত কলাবিভাগে বেশিই.........
আফসানা ভাবছিল আর হাসছিল, হঠাৎ ই তার মনটা খারাপ হয়ে গেল অদিতির কথা মনে করে।আজ ও আফসানা ভুলেনি অদিতিকে কেন সে এরকম করেছিল এই প্রশ্ন আফসানাকে তাড়িয়ে বেড়ায় আজও।   
...................................................................................................................................................................................................
অদিতি সাদিক। আফসানার বান্ধবী, খুব সুন্দরী দেখতে কলা বিভাগের প্রায় সবাই তাকে ভীষণ পছন্দ করেন।ছাত্রী হিসেবেও মোটামুটি, এলো চুলে  ভার্সিটি আসতেই বন্ধুরা তাকে ঘিরে ধরত তার ফ্যাশনেবল পোশাক আশাকের জন্যে,সেই সময়কার একজন বিরাট বড়লোক  বাপের একমাত্র মেয়ে অদিতি। তাই অন্য বন্ধুদের কাছে সে ছিল আইকন। তার ফ্যাশন সচেতনতা চোখে পরার মতন। আফসানার সাথে তার বন্ধুত্ব সেই কলেজ লাইফ থেকেই। অদিতি আর আফসানা একই কলেজের ছাত্রী ছিল। আফসানা যতটা লাজুক অদিতি তার উলটো সে সব কিছুকে  থোড়াই কেয়ার করত। রাজনীতি করা শফিকের সাথে তার এবার খুব ভাব যা আফসানা পছন্দ করত না,সবসময়ই এটা নিয়ে দুই বান্ধবির মাঝে ঝগড়া লাগত। আফসানা প্রায় তাকে বলত  তুই একদিন এটার জন্যে কাদঁবি দেখিস,
অদিতি হু বলে মুখ ঘুরিয়ে বলত যাহ এটা কোন ব্যাপার হল ?তুই তো কোন ছেলে দেখলেই লুকিয়ে থাকিস কথায় বলতে পারিস নাহ তোর ভবিষ্যৎ কি হবে এটা আমি আখান থেকেই বলে দিতে পারব।
আমাকে নিয়ে ভাবতে হবে নাহ তুই তোরটা নিয়ে ভাব,শফিকের মতন এইরকম ছেলের সাথে ঘুরিস তুই কোনদিন বিপদে পড়িস আল্লাহ জানে তখন এই আফসানা কে মনে করিস... আফসানার উত্তর। অদিতি মুখ ঘুরিয়ে নেয় আর কিছুই বলে নাহ।
সুদূর আমেরিকায় বসে  
আজ অদিতিও ভাবছে সেই কথা গুলি, না বলা অনেক কথায় জমে আছে, ইশ একবার যদি আফসানার সাথে দেখাটা হত তাহলে সেইদিনের সেই অপরাধের জন্যে সে ক্ষমা চাইত।অন্তত মারা যাওয়ার আগে সে এই কাজটা করে যেতে চায়।
...................................................................................................................................................................................................
ফ্লাশব্যাকে  ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়......... সময় টা ১৯৭১ এর আগে,তুমুল মিছিল আর মিটিং চলছে পাকিস্তানিদের অন্যায় আব্দারের বিরুদ্ধে। সব ছাত্ররা যোগ দিয়েছে  নেতৃত্ব দিচ্ছে শফিক সহ আরও কিছু বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা,দরাজ গলায় ভাষণ দিয়ে যাচ্ছে প্রায় সব নেতাই, শফিক ও দাঁড়াল বক্তৃতার জন্যে বলল আমাদের সময় হয়েছে কিছু একটা করার, এখন আর বসে থাকার সময় নাই সবাই কে ভাবতে হবে যে এখন যদি আমরা পাক হানাদার দের ষড়যন্ত্র রুখে না দেই তাহ লে আমাদের অধিকার আদায় করা সম্ভব হবে না। সবাই হাত তালি দিল তার কথা শুনে সাথে উজ্জিবিত হয়ে উঠল।শফিকের  বক্তৃতা শেষ হতেই আফসানা আর অদিতি দাড়িয়ে আছে দেখতে পেল শফিক।মঞ্চ থেকে নেমে এলো সে ততক্ষনে বাকিরা বক্তৃতা দেয়া শেষ করে পরবর্তী করনীয় সম্পর্কে  সিদ্ধান্ত নিচ্ছিল শফিক আফসানা আর অদিতি কে দেখে নেমে আসায় কেউ একজন জিজ্ঞেস করল ভাই কই যান ? একটু আসছি বলে শফিক সরে আসল। অদিতি শফিক কে দেখে উচ্ছাস প্রকাশ করলেও আফসানা মুখ ঘুরিয়ে রাখল।তেমন কিছুই বলল নাহ,শফিক আফসানাকে লক্ষ্য করে অদিতিকে জিজ্ঞেস করল এটা কি তোমার বান্ধবি আফসানা? অদিতির উত্তর তুমি নিজেই প্রশ্ন কর ও কে ওর নাম কি জান অদিতি হাসছে মিটি মিটি, আফসানা সালাম দিল ভদ্রতার খাতিরে আর অদিতিকে ইশারা করছিল চলে আসার জন্য। শফিকের ও রকম উৎসুক চাহনি বিরক্তির উদ্রেক করছিল,মেয়ে দেখলেই কি এইরকম করে নাকি এই টা তাইতো অদিতির সাথে এত ভাব, ভাবছে  মনে মনে। শফিক বলে উঠল আমার মনে হয় তোমার বান্ধবি আমাকে অপছন্দ করছে অদিতি।
অদিতিঃ না না টা কেন এই আফসানা পরিচয় করিয়ে দেই তোকে এই হল শফিক দেখেছিস তো যার কথা তো কে প্রায় বলতাম
আফসানা মাথা নাড়ে কিছুই বলে নাহ।
শফিকঃ তোমার বান্ধবি কি একটু কম কথা বলে নাকি কথাই বলতে পারে না অদিতি?
আফসানা এইবার খেপেছে বলে উঠল কথা আমি বলতে পারি তবে অপ রিচিত কারো সাথে অদিতির মত আলাপ জুড়ে দিতে পারি নাহ
হাস ল অদিতি,সাথে শফিকও 
 হুম বুঝলাম শফিকের উত্তর।
আজ আমরা আসি শফিক একটু কাজ আছে  পরে কথা হবে কেমন?বলে অদিতি
শফিকঃ এখুনি যাবে ঠিক আছে দেখা হবে পরে
ভালো থাকবেন আফসানা বলে শফিক
আফসানা নিরুত্তর।
চলি শফিক বলে অদিতি ঘুরে দাড়ায়। হঠা ৎই আফসানা মাথা টা ঘুরিয়ে পেছনে তাকায় শফিকের যাওয়ার পথের দিকে দেখে আগের জায়গায় ফিরে যাচ্ছে সে।
অদিতিঃকিরে কি দেখিস?
আফসানাঃকিছু নাহ
অদিতিঃতো?
এমনি দেখি আফসানার উত্তর।
অদিতিঃহুম বুঝেছি
আফসানাঃকি?
অদিতিঃকিছু নাহ চল  ওদিকে না তাকিয়ে
আফসানা মাথা ঘুরিয়ে নেয় চলে যায় তারা ভার্সিটির বাইরে
মাঝে মাঝেই অদিতি আফসানার হোস্টেলে থাক্ত,কাজ বেশি হলে বাসায় যেত না আফসানার সাথে ই থেকে যেত আজ ও তাই করেছে অদিতি।
রাতে হোস্টেলে ফিরে তারা সারাদিনের ঝক্কি সামলে খুবই ক্লান্ত তারা। রুমে ঢুকেই গা এলিয়ে দেয় বিছানায়
 অদিতি,আফসানার এটা একদম ই অপছন্দ বাইরে থেকে ফিরে কেন বিছানায় যেতে হবে একটু ফ্রেশ হলে কি হয়? এই উঠ বলে আফসানা।
উহহ জ্বালাস না আফসানা ঘুমুতে দে।অদিতির উত্তর
তুই কি মানুষ হবি নাহ তুই সারাদিন ঘুরে এখন হাত মুখ না ধুয়েই শুয়ে পড়লি তাও আমার বিছানায়,
কেন?
তুই জানিস আমি আসব একদম পছন্দ করিনা তার পর ও কেন আসব করিস?আফসানার রাগী জবাব
অদিতিঃ তোকে খেপাতে ভালো লাগে আমার তাই করি।
আফসানাঃযাহ উঠ এখন
অদিতিঃ যাচ্ছি তো বাবা

২জনের কথার ফাঁকে হোস্টেলের দাদু আসলেন,বাবু নারায়ন তার নাম, নারায়ন অনেক দিন হতেই আছে এই হোস্টেলের দাড়োয়ান হিসেবে।
এসেই বলে মা অদিতি একটা চিঠি আছে আপনার।
আমার ? অবাক হয় সে কে দেবে চিঠি আমাকে?অদিতির মনে প্রশ্ন
শফিক?নাহ সে কেন চিঠি দিবে আমাকে ?
আফসানা বলে দেখি দেখি কে এত রাতে চিরকুট দিল।অবশ্য দেয়াটা স্বাভাবিক। কি বলিস অদিতি?আফসানা হাসছে
অদিতিঃচুপ থাক তুই।চিঠি না পড়েই বেশি কথা বলছিস আগে দেখি কে লিখেছে চিঠিটা।
নারায়ন এর হাত থেকে চিঠি টা নেয় সে। চিঠি খুলে পড়তে শুরু করে।নামহীন একটা চিঠি কাকে লিখেছে তাও বলা হয় নি
শুধু লেখা আছে আজ খুব ভালো লাগছিল দেখতে। এক লাইনে লেখা এই চিঠিটা পড়ে ফেলল ২জনেই। মাথা তো ঘুরে গেছে ২জনের ই বিশেষত
অদিতির,সে ভেবেছে তার কাছেই চিঠিটা শফিক লিখেছে তাই এর আনন্দ একটু উপভোগ  করবে সে এই যখন ভাবছে তখন আফসানা কে দেখে আনন্দ করার মন চুপসে গেছে।
এদিকে আফসানা ভাবছে কি করা যায়, যেই ই এই কাজ করেছে তাকে একটা শাস্তি তো দিতেই হবে।
নারায়ন দাড়িয়ে আছে উত্তরের অপেক্ষায়...
অদিতি বলল নারায়ন কাকা কে দিয়েছে এই চিরকুট চিঠি?
নারায়ন; আমি জানিনা দিদিমনি আমাকে দিয়েছে একটা ছোট ছেলে দিয়ে বলেছে  আপনাদের দিতে
অদিতিঃ আপনাদের মানে?এই না বললে আমাকে দিয়েছে।
নারায়নঃ ওহ ভুল করেছি আমি ভেবেছি এই চিঠি  আপনি ছাড়া  আর কারো হবে না কারন আপনি ছাড়া তো এর কারো এত বন্ধুবান্ধবি নাই।
আফসানা এইবার মুচকি হাসল। অদিতি আফসানার দিকে তাকিয়ে মুখ বাকিয়ে নিল।
ঠিক আছে আপনি যান বলে উঠল আফসানা
নারায়ন চলে গেল। আফসানা এইবার জোরে  হেসে উঠল,
অদিতিঃ  কি হয়েছে এত হাসিস কেন?
নাহ কিছু নাহ  এমনি হাসলাম।
দারুন তো !!! হঠাৎই বলে উঠল আফসানা,
কি? উত্তরে জানতে চাইল অদিতি
আফসানাঃ আজ তোকে কেউ চিরকুট দিচ্ছে কাল প্রেম নিবেদন করিবে বাহ বাহ কি দারুন!!!!
অদিতিঃ খুব ভালো কথা। এটা যদি শফিক বা রায়হান হয় তো আমার চেয়ে বেশি খুশি এর কেউ হবে নাহ।
আফসানা হু বলে ও পাশ ঘুরিয়ে শুয়ে পড়ে।
প্রদিন সকালে হই হল্লা শুনে তাদের ঘুম ভাঙ্গে। কি হল? এত সকালে এত হল্লা কিসের?
আফসানা বাইরে তাকায়।দেখে হোস্টেল সুপার এর সাথে কারা যেন হল্লা করছে,  আফসানা অদিতিকে ডেকে তোলে এই এই অদিতি উঠ দেখ কি হএছে বাইরে। উহ সকালে ও তোর লেকচার যাহ্‌ এখান থেকে।
ধুর তুই থাক আমি দেখছি বলেই আফসানা উঠে গিয়ে দরজাটা খুলে দেখে শফিক এর সাথে হোস্টেল সুপার কথা বলছে
আফসানাকে তাকে দেখেই ধাম করে দরজাটা বন্ধ করে দেয়, এ বেটা এখানে কি করতে আসছে? আফসানার মনে প্রশ্ন
রাতে তো চিঠি দিয়েছে আজকে আবার এত সকালে কি কাজে আসছে?
দৌড়ে সে এক ধাক্কা দিয়ে অদিতিকে তুলে ফেলে উঠ তোর প্রেমিক আসছে
হুড়মুড় করে উঠে যায় অদিতি। কি??? কি বলিস তুই?আমার প্রেমিক??কে? অদিতির  বিস্ময় ভরা প্রশ্ন
শফিক উত্তর দেয় আফসানা
কি???? সে এখানে??
এক দৌড়ে জানালার ধারে দাড়ায় অদিতি
আহারে কি প্রেম  আফসোস করতে থাকে আফসানা শুনেই এই দশা আমি এতক্ষণ আমি চিল্লাচিল্লি করে তুলতে পারিনি এখন শফিকের নাম শুন তেই  উনার ঘুম চলে গেছে,হা হা হা হাসছে আফসানা।
এখন কি হবেরে তোর অদিতি?  
চুপ কর তুই শফিক আমাদের আদিকেই আসছে।
কি???? চীৎকার করে উঠল আফসানা আর দৌড়ে বাথরুমে চলে গেল,অদিতি তখন নিজেকে দ্রুত পরিপাটি করে গুছায় নিয়েছে যাতে দেখে তাকে খারাপ না লাগে। কিন্ত যেই না দরজা খুলল দেখল সে শফিক হেটে চলে গেছে ততক্ষনে অন্যদিকে।মন্তাই খারাপ হয়ে গেল তার ইশ কি সুন্দর করেই না সেজেছিল সে ধ্যাত মনে মনে বলল অদিতি।
ওদিকে বাথরুমের দরজার একদিকে দাড়িয়ে লুকিয়ে দেখছিল আফসানা, অদিতির ধ্যাত শব্দ টা কানে আসতেই সে ভাবল কিছু হয়েছে।
বাথরুম থেকে বেরিয়ে এসে অদিতির দিকে তাকিয়ে সে বলল কিরে কি হল?
শফিক চলে গেছে ,অদিতির উত্তর
কেন? আফসানার উৎসুক চাহনির প্রশ্ন 
ওহ জানিনা ,তোর ইচছা করলে তুই জেনে নে কেন আসল না
আফসানা মুখ ঘুরিয়ে নেয় আর বেশি কিছুই বলে নাহ
তৈরি হয় তারা ক্লাসের জন্যে আর ক্লাসের দিকে চলে যায়।
ক্লাসের দিকে যেতেই রায়হান তাদের দেখে এগিয়ে এসে বলে কি খবর কিছু জানিস আজকে কি হয়েছে?
আফসানা আর অদিতি একে অন্যের দিকে তাকায় ব্যাপার কি আজ কে রায়হান আমাদের কাছে কেন এসেছে ?তাহলে কি রায়হান ই চিরকুট পাঠাল।
আফসানাঃকি হবে আবার?আর কওন খবরের কথা বলছ তুমি?
ওহ তার মানে তোমরা জানো না।শুনে নিও তাহলে ক্লাসে গিয়ে।এই বলে সে চলে গেল।ঘটনা র এত নাটকীয়তা ভালো লাগছিল না আফসানার বিরক্ত হয়ে জিজ্ঞেস করল কি এত নাটক না করে বল কি হয়েছে ?
রায়হানঃ গতকাল যে আন্দোলন আর মিছইল হয়েছে তার জন্যে যারা এই কাজের সাথে জড়িত ছিল তাদের তলব করা হয়েছে আর বিভাগের প্রধান কে জবাবদিহিতা করতে বলা হয়েছে।আর সাথে কোন মিটিং মিছিল না করার জন্যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে সাথে ছাত্র ছাত্রীদের হল ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়েছে।
কি??? চীৎকার করে বলে উঠল  আফসানা
পরীক্ষা হবে না? খুশি হল অদিতি
রায়হান ২ বান্ধবির প্রতিক্রিয়া দেখে থ হয়ে গিয়ে বলল আশ্চর্য ২জনে এরকম করে উথলে কেন?
আফসানা সর আগে আমি ক্লাসে যাই
আমি যাব না আমি দেখি শফিক কই।বলে অদিতি এই বলে সে চলে গেল শফিকের খুঁজে
২জন দুদিকে চলে গেল।রায়হান দাড়িয়ে ভাবছে আল্লাহ কি মেয়ে রে এরা,যাক অদিতি শফিকের খোঁজে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরতে লাগল। শফিকের পাত্তাই নাই সকালে কেন হোস্টেলে গেছে তাও বুঝতে পারছে না আবার আর আগে চিরকুট কি শফিকই দিয়েছে তাও জানা টা দরকারি। এখন তাই এই হুড়মুড় করে দৌড়ে খুঁজে যে  শফিক কে পাওয়া যাবে তার কি নিশ্চয়তা আছে? যেই ভাবছে অমনি দেখে শফিক তার রাজনৈতিক এক সহকর্মীর সাথে গম্ভির আলাপ করতে করতে হেটে এদিকে ই আসছে চোখেমুখে তার দুশ্চিন্তার ছাপ।অদিতিকে দেখেই দাঁড়াল শফিক। 
বন্ধুকে বিদায় দিয়ে জিজ্ঞেস করল কি ব্যাপার অদিতি এতো অস্থির দেখাচ্ছে কেন তোমাকে? শফিকের প্রশ্ন।
অদিতিঃ আমি সরাসরি তোমাকে একটা প্রশ্ন করতে চাই।
শফিকঃ কি প্রশ্ন?
অদিতিঃ তুমি আজ মেয়েদের হোস্টেলে গিয়েছিলে কেন?
শফিক; ওহ আমার বোন আছে ওখানে তাই।কেন কি হয়েছে?
অদিতিঃ বোন?তোমার বোন আছে শফিক এটা তো বল নাই কোনদিন।
শফিকঃ তুমি কি জিজ্ঞেস করেছ কোনদিন ? শফিকের পাল্টা প্রশ্ন?অদিতি চুপ হয়ে গেল।
শফিকঃ তা এই প্রশ্নের জন্যে আমাকে খুঁজছিলে?
অদিতিঃনাহ,
শফিকঃতবে?
অদিতিঃএকটা চিরকুট পেয়েছি গত রাতে।এটা কি তুমি আমাকে দিয়েছ?
শফিক এইবার একটু উৎসুক হয়ে জিজ্ঞেস করল চিরকুট?কিসের?
অদিতিঃ ভনিতা করছ? আমাকে লেখ নাই তুমি আমাকে সুন্দর লেগেছে।
শফিক অবাক হয়। তোমাকে? আমি তো গতরাত থেকেই মিটিং নিয়ে আছি আমাদের আর কোন সভা করতে দেয়া হবে না এটা শুনার প্র থেকেই আমরা পরবর্তী কর্মসুচি নিয়ে ই আলাপ করছিলাম তা তো দেখেছই আর আমি কেন তোমাকে লুকিয়ে চিরকুট দিব বল?আমি তো তোমাকে সরাসরিই বলি তুমি সুন্দরী। এটা শুনে অদিতির মাথা আর এক বার ঘুরে গেল ভাবতে লাগল তাহলে কে এই কাজ করেছে?ইশ আমার মানসম্মান গেছে শফিকের কাছে কি ভাবছে সে এখন? এই যখন ভাবছে তখন শফিকই বলে উঠল কি ব্যাপার অদিতি কার প্রেমে পড়লে?
অদিতি কারো নাহ আমি প্রেমে পড়িনি বরং প্রেমিক নিজে আসছে আমার কাছে। কিন্তু এই প্রেমিক কে তা  জানি না যদি একে একবার পাই তো ধরব আমি কি কারনে এই শয়তানি করেছে। আসি শফিক।
শফিকঃ আজও এত তাড়াতাড়ি চলে যাচ্ছ? একটু বসতে গলপ করতাম। আমার এমনিই মনটা খারাপ।দেশের পরিস্থিতি ভালো না অদিতি যে কোন সময় যে কোন কিছু হতে পারে ভার্সিটি বন্ধ করে দিলেই কি আন্দোলন বন্ধ হবে? আমাদের আন্দোলন চলবে অদিতি যে কোন কিছুর বিনিময়েই আমরা অন্যায়কে রুখতে চাই।  
অদিতি; শফিক আমি বুঝি না তুমি রাজনীতি করে কি মজা পাও? জানই যখন লাইফ রিস্ক আছে তো কেন করছ? তোমার  মতন ছাত্র রা বাইরে চলে যায় আর তুমি দেশ দেশ করে মরছ কি লাভ হবে বলত?
শফিকঃ কি বলছ অদিতি? দেশ ছেড়ে আমি কোথাও যাব না এটা আমার দেশ আমি সব সময়ই রাজনীতি করেছি দেশের জন্যে নিজের পকেট পুরানোর জন্যে না অদিতি। তোমার মতন বড় ঘরের সন্তান হলে হয়ত আমার ও এইরকম ভাবনা থাকত। সরি অদিতি তোমাকে কষ্ট দিয়ে কথা বলার জন্যে।
অদিতি অবাক হয় শফিকের কথায় আর মন খারাপ করে চলে আসে।শফিক তাকায় অদিতির যাওয়ার দিকে কিছুই বলে নাহ।
...................................................................................................................................................................................................।
অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে শুনে আফসানার মন খারাপ। তার এইবারের পরীক্ষাটা দেয়া একটু কষ্টের হয়ে যাবে যদি অনেকদিনের জন্যে বিশ্ব বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যায়...এই ভাবনা যখন ভাবছে সে অমনি দারোয়ান নারায়ন এসে বলে দিদিমনি আজ সকালে একটা চিরকুট পেয়েছি গত রাতের মতন।কথাটা শুনেই আফসানা ঘুরে তাকাল নারায়নের দিকে বলে উঠল কে দিয়েছে নারায়ন কাকা ?
নারায়ন মাথা নেড়ে বলতে থাকে  রায়হান নামের এক ছেলে শুনেই তো থ বনে গেছে সে।গতরাতের পর দেখি আর সাহস বেড়েছে তাই আবার আজ চিরকুট দিয়েছে,নারায়ন কে চলে যেতে বলে সে চিরকুট টা নিল। খুলে ফেলল আফসানা চিথিতা,খুলেই মনে আসল অদিতির চিঠি এইভাবে পড়াটা কি ঠিক হবে? আবার ভাবল নাহ পড়ে ফেলি তাহলে কে এই কাজ করেছে তাকে বের করতে সুবিধে হবে। যেই ভবা সেই কাজ খুলে পড়তে শুরু করল সে। আজ দেখি চিঠিই লিখেছে...............।।
প্রিয় আফসানা,
তুমি কেন আমাকে পছন্দ কর না জানিনা,কিন্তু আমার তোমাকে খুবই ভালো লেগেছে ,আমি জানিনা তুমি আমার এই চিঠি পেয়ে কি করবে?শুধু জানি তুমি আমাকে অপছন্দ করলেও করতে পার কিন্তু আমি তো মাকে ভাল বেসে ফেলেছি এখন তোমার উত্তরের অপেক্ষায় আছি......।
ইতি
রায়হান।
এক নিঃশ্বাসে পড়ে আফসানা চুপ হয়ে গেছে। কি করবে বুঝে উঠতে পারছে না,তার মানে গতকালের চিরকুট আমাকে দেয়া হয়েছে অদিতিকে নয়। হায় হায় অদিতি তো শফিকের কাছে জানতে গেছে যে এই চিঠি শফিক লিখেছে ভেবে। এখন এখন কি হবে? এতক্ষণ তো আমি ফাজলামো করেছি এখন অদিতি আমাকে নিয়ে করবে তার চেয়ে বড় কথা হল সে তো শফিক কে পছন্দ করে ফেলেছে যা বুঝলাম এখন তো ওর মন খারাপ হয়ে যাবে কি করা যায়? ভাবছে আফসানা হঠা ৎ ই মাথায় আসল এই চিঠির কথা বলবে না অদিতিকে সে। যেই ভাবছে অমনি অদিতি আসে তার রুমে, আফসানা চিঠিটা লুকিয়ে ফেলে,অদিতির দিকে তাকায় সে অদিতি মন খারাপ করে তার বিছানায় শুয়ে পরে।
কি হয়েছে তোর? জিজ্ঞেস করে আফসানা
কিছু না অদিতির ম্লান উত্তর
আফসানা একটু ঘুরে গিয়ে চিঠিটা যত্ন করে সরিয়ে রাখে তার আলমারিতে।
এই ফাঁকে সে  আবার অদিতির দিকে  তাকায় আর দেখে যে অদিতি ফুপাচ্ছে
কিরে?কি হয়েছে তোর?আফসানার প্রশ্ন
অদিতিঃশফিক আমাকে চিঠি দেয়নি আফসানা
ওহ এই জন্য মন খারাপ তোর ? এতে কাঁদার কি আছে বলতো?
অদিতিঃ কিছু নাই?
আফসানাঃ নাতো আছে নাকি কিছু?
অদিতিঃ জীবনের ১ম চিঠি পেয়েছি তাও কে লিখেছে তাও জানার সুযোগ হল না তাই অপমানে কাঁদছি 
আফসানাঃ শুন এটা কেউ ফাজলামো করেছে  আমাদের সাথে। যে করেছে তাকে আমি ধরতে পারব তুই মন খারাপ করিস না।
অদিতি; তুই চিনিস তাকে ?
আফসানাঃ না খুঁজতে হবে কিন্তু এখন সে সময় নাই বিশ্ব বিদ্যালয়  খুললে দেখব ক্ষন। 
অদিতিঃহু আমিও দেখতে চাই কে সে।এই বলে অদিতি চলে যায়।আফসানা অদিতি চলে যেতেই  রায়হানের দেয়া চিঠিটা খুলে আবার পড়ে আর চিঠির লেখার দিকে তাকিয়ে থাকে  চেনা যায় কিনা এই লেখা। রায়হান আমাকে পছন্দ করে আফসানা ভাবছে  মনের কোনে একটা  কিছু ঝিলিক দিয়ে উঠল। মনে মনে হাসছে সে আর অদিতির জন্যে খারাপ লাগছে কারন অদিতি শফিকের আশায় গিয়েছিল। রাতে হোস্টেলের সুপার এসে জানাল আগামিকাল অথবা পরশু বিশ্ব বিদ্যালয় বন্ধের নোটিশ দেয়া হতে পারে,আফসানার মনটা আবার একটু খারাপ  হয়ে গেল কারন  দেখা করার সুযোগ আর নেই, যেই ভাবছে হঠা ৎ ই মাথায় এল সে তো একটা চিঠি লিখতে পারে  রায়হান কে ।যেই ভাবা সেই কাজ
চিঠি লিখতে বসে গেল সে।
রায়হান,
চিঠিটা পড়লাম আমি কিন্তু আমার জানতে ইচ্ছা করছে কেন এইটা তুমি সরাসরি বল নাই। যাক এখন তো বিশ্ব বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাবে তাই এটার ব্যাপারে আমি পরে ভেবে জানাব
ইতি
আফসানা
চিঠি লিখেই ভাবছে আমি তো সরাসরিই কথা বলতে পারতাম নাহ থাক কারন অদিতির মতন অবস্থায় পরতে চাই না যেমন আছে তেমনই থাক।
চিঠিটা লিখেই সে  নারায়ন কে ডাকল।
নারায়ন কাকা যিনি এই চিঠি দিয়েছেন তাকে এই চিঠিটা দিবেন যদি আপনি চিনে থাকেন আর অদিতি দিদিকে চিঠির কথা বলবে না কেমন? নারায়ন মাথা নাড়ে কিছুই না বলে চলে যায় চিঠি নিয়ে।
এদিকে আন্দোলন চলছে ছাত্ররা তুমুল মিটিং আর মিছিলে পুরো ক্যাম্পাস কাঁপিয়ে তুলছে অনেক মারামারি হবার আশঙ্কায় বিশ্ব বিদ্যালয় বন্ধের নোটিশ দেয়া হল।  পুলিশ যারা ই আন্দোলনে গেছে তাদের ধরতে শুরু করেছে  এই অবস্থায় বিশ্ব বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেল। 
আফসানা চলে গেল তার বাসায়। আর অদিতি... সে খোঁজে আছে  ঐ চিরকুট ওয়ালার।  
বিশ্ব বিদ্যালয় বন্ধের পর......
 আফসানার বাসায় আসল আরেকটি চিঠি।
আফসানা চিঠির  উত্তর পেয়ে একটু ইতস্তত এবং মনে মনে খুশিই হয়েছে একটু, কিন্তু ভাবছে  বাসার ঠিকানায় চিঠি কিভাবে আসল ? রায় হান তো আমার বাসার ঠিকানা জানে নাহ আবার ভাবল সে  হয়ত আমার  বাসার ঠিকানা  খুঁজে বের করেছে। যাহোক চিঠি টা  খুলল সে। দেখা করতে চায় রায়হান।আফসানা খুশিই হল কিন্তু ... ভাবছে আফসানা দেখা করতে  হলে তো তাকে ভার্সিটি যেতে হবে আর ভার্সিটি এখন বন্ধ।
এত ভেবে লাভ নাই ভাবছে আফসানা গিয়ে দেখি কি বলতে চায়,ভাবছে যখন কাজের মেয়েটা আসে বলে অদিতি আপা আসছে।আফসানা ভাবে ইশ অদিতি এখন কেন আসল পরে এলেই পারত নাহ,ভাবতে ভাবতে দেখা করতে গেল সে। 
আফসানাকে দেখে অদিতি বলল কিরে তুই তো ভার্সিটি বন্ধ হবার পড়ে আমার ওদিকটায় যাসই না কি হয়েছে তোর ?
আফসানাঃ কই কিছু নাতো... আমি একটু ব্যস্ত আছি তাই তোর ওদিকে যাইনি আর জানিস তো শহরে কি চলছে।
অদিতিঃ এই তুই কি ঐ চিরকুট ওয়ালা কে পেয়েছিস?
আফসানাঃ নাহ কেমনে পাব বল?ভার্সিটি তো বন্ধ।
অদিতিঃ হুম। শফিক আসছিল আমার বাসায় তোর কথা জিজ্ঞেস করেছিল। 
আফসানাঃআমার কথা?হঠাৎ?
অদিতিঃ আমিও অবাক হয়েছি কেন জানতে চাইল।জিজ্ঞেস করেছিলাম তাকে বলল 
আমার বান্ধবি তুই তাই জানতে চেয়েছে কেমন আছিস।  
আমি তাকে একদম পছন্দ করি না বলল আফসানা
তাতো আমি জানি উত্তরে বলল অদিতি।
আফসানাঃ  আমি একটু বেরুব অদিতি।
অদিতি; কই যাবি? আমিও যাব তোরসাথে।আফসানা একটু বিরক্ত হয়ে বলল তুই কি করতে যাবি?
অদিতিঃ এই না বললি শহরের অবস্থা ভালো না তাই তোর সাথে যাব আমি
আফসানা আর সইতে পারছিল না অদিতিকে বিরক্তির সাথে বলল যাহ্‌ তুই বাসায়
অদিতি; তুই কিছু লুকাচ্ছিস নাকি আফসানা? তুই তো এমন করিস না  আজ কি হল?
আফসানাঃ ভালো লাগছে না আমার অদিতি আজকে তুই যাহ্‌ পরে আসিস।
অদিতিঃঠিক আছে আমি গেলাম।
বলেই চলে গেল সে।অদিতি যেতেই  আফসানা তৈরি হয়ে গেল বাইরে যেতে, ভার্সিটি এলাকাটা একটু সুনসান হয়ে আছে। আফসানা এরপরও সাহস করে গেল সামনের দিকে একটু এগুতেই শফিকের সাথে দেখা দেখা হয়ে  গেল। কি ব্যাপার তুমি এখানে কি করছ  আফসানা?
শফিকের  উৎসুক প্রশ্ন। আফসানা এড়িয়ে যেতে চাইল তাকে।শফিক বলে  উঠল তুমি কি রায়হান কে  খুঁজছ?
চমকে উঠল আফসানা,শফিক কিভাবে  জানে আমি  রায়হান কে খুঁজছি?
শফিক মিটিমিটি হাসছে। আফসানা অবাক, শফিক বলে আমিই রায়হান
আফসানা  পুরো নাম শফিক রায়হান।এইবারে আফসানার  হুশ ফিরেছে।আফসানা কিছু বলতে  পারছে নাহ চুপ করে আছে।
হঠা ৎই একটা  আওয়াজ  আসল। শফিক আফসানাকে বলল চল অন্য কোথাও যাই ,আফসানা বলল না যা বলার এখানেই বলো... শফিক বলল এখানে তো গন্ড গোল হতে পারে আফসানা তখন আফসানা রাজি হল ভার্সিটি এলাকা ছেড়ে সরে যেতে। অনেক টা ভয় নিয়েই  
অনেকক্ষন ধরে চুপ আফসানা,  শফিক  বলে চলেছে  তোমাকে  আমার  খুবই পছন্দ আফসানা চিরকুট টা আমিই পাঠিয়েছিলাম
তো মিথ্যে বলার দরকার  কি ছিল? আফসানার প্রশ্ন।
ভাবছিলাম  তুমি এত সহজে  আসবে না তাই......
আফসানাঃ এটা সত্য কারন আমি জানতে  চাইছিলাম এই কাজ টা কে করতে পারে।
শফিক আমি তোমাকে পছন্দ করি না কারন রাজনীতি করা লোক আমার অপছন্দ।সোজা উত্তর  দিল আফসানা
শফিক চুপ করে থাকল কিছুক্ষন,আবার বলতে শুরু করল দেখ আফসানা আমি ও সরাসরি কথা বলতে পছন্দ করি কিন্তু সাহস হচ্ছিল না বলেই... যাহোক যেহেতু তুমি রাজি না তাই আর তোমাকে বিরক্ত করতে চাই না। আফসানা বলে ফেলল একটু কড়া ভাবেই... শফিক অদিতি মনে হয় তোমাকে পছন্দ করে,চমকে উঠল শফিক বলে কি বলছ তুমি ? হাঁ আফসানা বলল। আমার মনে হয় তুমি তার সাথেই ......
শফিক কিছু বলে না উঠে যায়। আফসানা ও উঠে গিয়ে একটা রিক্সা ডাক দিয়ে নেয় শফিক তার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে উদাস হয়ে...
কাজটা কি ঠিক করেছি? আফসানার মনে প্রশ্ন।আমি তো গিয়েইছিলাম দেখতে রায়হান কে? আমার ও তো ভালই লেগেছিল কিন্তু শফিকের কাণ্ড দেখে আমি আসলেই বিরক্ত হয়েছি  মনে মনে বলছে আফসানা কিন্তু এই ভাবতে ভাবতে সে ভীষণ খারাপ অনুভব করছিল।  
কিছুদিন পর...
ঢাকা ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের মিছিলে পুলিশ হামলা করেছে হামলায় অনেক ছাত্র নেতা আহত হয়েছেন পেপারের হেডলাইন এটা। অদিতি  হাঁপাতে হাঁপাতে আসে আফসানার কাছে।
অদিতিঃআফসানা শুনেছিস কিছু?
আফসানা অদিতিকে দেখে বলছে হাঁ শুনেছি তো কি হয়েছে?
অদিতি;শফিক হাসপাতালে। আমি যাচ্ছি ওকে দেখতে তুই যাবি? শুনেই আফসানার মনটা একটু নরম হয়ে গেছে,রাজি হয়ে গেল অদিতির সাথে যাওয়ার জন্যে। 
আফসানা আর অদিতি শফিক কে দেখতে গেল হাসপাতালে। পুলিশ ছিল হাসপাতালের বাইরে। 
তারা যখন শফিকের কেবিনে ঢুকল তখন শফিকের বাবার সাথে দেখা,সালাম দিল তারা। শফিকের বাবা সালামের উত্তর দিয়ে বলল মা তোমরা কি শফিকের সাথে পড়?আফসানা আর অদিতি মাথা নেড়ে হাঁ বলল। শফিক খুব খুশি হল আফসানাকে দেখে,অদিতি অস্থির হয়ে উঠল শফিকের অবস্থা দেখে  বলল শফিক একদিন তুমি বিপদে পড়বে কিন্তু এই আমি বলে দিলাম তোমাকে,আফসানা মুখ ঘুরিয়ে রাখল আরেকদিকে ,শফিক বলল অদিতি এত উতলা হবার কি আছে আমি ভালো আছি দেখতেই পাচ্ছ তো শফিকের জবাব। আফসানাকে দেখে জিজ্ঞেস করে সে... কেমন আছো আফসানা?
আফসানা মুখ ঘুরিয়েই বলল ভালো আছি।তা আপনি এই অবস্থায় ভালো আছেন তো?একটু ঠাট্টা করে সে জিজ্ঞেস করে। বুঝতে পারে শফিক।
তখন সে বলে... হ্যা আছি ভালই আছি। তোমরা এসেছ তাই আমি খুশি হয়েছি। মাঝ থেকে অদিতি বললঃ শফিক আমিই আফসানাকে ধরে নিয়ে আসলাম। 
শফিক তখন তাকায় আফসানার দিকে। আফসানা অন্যদিকে তাকায় তখন,অদিতি আর আফসানা যখন কথায় ব্যস্ত সে মুহূর্তে শফিকের বাবা তাদের রেখে বাইরে গেলেন ডাক্তার এর  সাথে পরামর্শ করতে,এরই ফাঁকে আফসানা কে অদিতি বলে এই তুই কিএকটু বাইরে যাবি আমার শফিকের সাথে আলাপ আছে।আফসানা বলল কেন? আমি থাকলে কি তোদের সমস্যা আছে? মনে মনে আফসানার ভীষণ রাগ হচ্ছিল রাগে ফুসছে সে আর মনে মনে বলছে শফিক কি একটু বলতে ও পারে না অদিতি তুমি যাও এখন... আশ্চর্যও। বেহায়াপনার একটা শেষ আছে। যেই ভাবছে এটা তখনি শফিক বলে উঠল কি এমন কথা যা আফসানার সামনে বলছ না তুমি অদিতি? অদিতি ইতস্তত করছিল তা দেখে আফসানা বলল ঠিক আছে আমি বাইরে যাচ্ছি তোরা আলাপ কর, শফিক একটু বিরক্ত হল অদিতির উপর তাও চুপ কারন আফসানা তাকে ভালবাসে না এটা সে বলেছে তাই শফিক তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইল।আফসান যাবার পর অদিতি শফিকের দিকে তাকিয়ে  শফিক বলে ডাক দিল আর বলল তুমি আমাকে চিরকুট দাওনি মানলাম কিন্তু এই লেখাটা যে তোমার তা আমি জানি কারন আমি তোমার লেখা দেখেছি। এখন বল এটা কেন করেছ? শফিক বলে সরি  এমনিই করেছি তোমাকে দেখার জন্যে যে কি কর তুমি।হাসছে সে। অদিতির সরাসরি জবাব...শফিক আমি এটা খুব সিরিয়াসলি নিয়েছি আর আমি তোমাকে পছন্দ করি।এটা শুনে শফিক একটু নড়েচড়ে বসল এত সহজে অদিতি সরাসরি তার কথা বলছে !!!!!! শফিক বিস্ময় প্রকাশ করল ।শফিক আমি চাই তুমি রাজনীতি ছেড়ে  দাও কারন এটা তোমার জন্যে ঠিক হবে না।অদিতিকে থামিয়ে দিয়ে শফিক বলে আমি কাউকে পছন্দ করি অদিতি। অদিতি চমকে উঠে। কি???? অদিতির চোখে বিস্ময় কে সে? উৎসুক প্রশ্ন তার চোখে।  শফিক বলে তুমি তাকে জান অদিতি।  অদিতি বলে কে বল? আফসানা শফিকের উত্তর। অদিতি চুপসে যায় কিছুক্ষনের জন্যে...আবার জানতে চায় সে  আফসানা জানে ? শফিক  বলে হাঁ জানে তাই সে আসতে চাইনি এখানে। অদিতি তাকিয়ে থাকে শফিকের দিকে একটা নীল কষ্ট অনুভব করছে সে এখন,জীবনের ১ম ভালবাসা এভাবে হারিয়ে যাবে তার ভাবেনি সে তাও তার আপন বোনের মত  আফসানার কারনে অদিতির ভীষণ কষ্ট হয়। শফিক কে জিজ্ঞেস করল সে আফসানা কি  ভালবাসে তোমাকে? শফিক বলে  না। অদিতি জানত কারন আফসানা শফিক কে ১ম থেকেই অপছন্দ করত,কিন্তু শফিক যে আফসানার জন্যে তাকে বাদ দিয়ে দেবে এটা তার মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছিল তাই সে জিজ্ঞেস করল শফিক তুমি কি আফসানা ছাড়া  আর কাউকে ভাবতে পারবে নাহ? শফিক নিরুত্তর। অদিতি বেরিয়ে যায় শফিকের কেবিন থেকে চোখে অশ্রু... ওদিকটায় আফসানা রাগে ফুলছে কি এমন কথা  যা আমার সামনে বলা যায় না, শফিক ও দেখি গলে গেছে অদিতির জন্যে। আরে আমার কি হয়েছে আমি কেন এইরকম করছি শফিকের জন্যে?? নিজেকে প্রশ্ন করছে সে,তাকিয়ে দেখে অদিতি আসছে চোখ  ফোলা তার... আফসানা তাকে দেখেই বলে কিরে কি হয়েছে অদিতি ? অদিতি  তার সাথে কোন কথা  না বলেই চলে  যায়।
আফসানা অনেক ডাকে তাকে কিন্তু কোন লাভ হয় না এতে শুনতেও পায় না যেন সে  চলে যায় সে আফসানার দিকে ফিরেও তাকায় না আর।বাসায় ফিরেই হু হু করে কাঁদতে থাকে সে অদিতির মা এসে জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে তোর মা? কিছু না মা ? তুমি যাও এখন আমাকে একটু একা থাকতে দাও মা। অদিতির মা চলে যায়। অদিতি তার জীবনের ভালবাসা হারিয়ে পাগলের মতন কাঁদতে থাকে। ...................................................................................................................................................................................................   
উত্তাল ৭১। ছাত্র আন্দোলন বাড়ছে তো বাড়ছেই। কমার নাম নেই। আফসানার সাথে অদিতির কোন দেখা নেই,ভার্সিটি ও খুলছে না কারন ছাত্র রা আন্দোলনে নেমেছে। এরই মাঝে জানা গেল শফিক হাসপাতাল ছেড়ে গেছে। তার বাবা কে আগেই বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে সে।রায়হান সহ অন্য বন্ধুরা তাদের ই এক বন্ধুর বাসায় মিটিং য়ে  বসেছে কি করা যায় সবাই অপেক্ষায় আছে কি নির্দেশনা আসে জানার জন্যে।  শফিক ও ছিল ওখানে শফিক কে দেখে সবাই খুশিই হয়  কারন অনেক রিস্ক নিয়ে এসেছে সে।যে বাড়িতে শফিকরা মিটিং করছে সে বাড়ীর মালিক হলেন নেহার আলি সাহেব খুব ভাল মানুষ,ছেলেরা যা করছে তাতে উনার কোন আপত্তি নাই উলটো উনি সাহায্য করছেন।উনি শফিকের অবস্থা দেখে বললেন বাবা এক কাজ কর আজ তুমি আমার এখানে থেকে যাও সময় হলে চলে যেও শফিক আপত্তি করল কারন তার বাসাটা অতটা নিরাপদ জায়গায় নয় একটু দূরে ই পুলিশ ফাঁড়ি  তাই সে বলল না চাচা কখন যে আমাকে ধরে নিতে আসে তার ঠিক নাই আপনি  বেশি ভাববেন নাহ আমি চলে যাব।  মিটিং শেষে সবাই যাওয়ার জন্যে তৈরি  হল শফিক রায়হান কে জিজ্ঞেস করল আফসানার বাসাটা চিনে কিনা ? রায়হান হাঁ সুচক উত্তর দিল সাথে জানতে চাইল কেন? অদিতির খোঁজে মিথ্যে বলল শফিক। রায়হান কে সাথে নিয়ে তারা আফসানার বাসায় চলে গেল ,বাসার সামনে    তারা দেখে একটা  পুলিশের  গাড়ি দাঁড়ানো আছে এটা দেখে শফিকের মন টা খারাপ হয়ে যায়  রায়হান বুঝতে পারে সে এগিয়ে যায় শফিক তার হাত ধরে ফেলে না যাওয়ার জন্যে  কিন্তু রায় হান সাহস করে এগিয়ে যায়। শফিক দাঁড়ানো থাকে। পুলিশের পাশ কাটিয়ে সে চলে যায় আফসানার বাসার পেছনের দিকটায় এটা দেখে শফিক ও এগিয়ে যায় ওদিকটায়, তারা ২জনে যখন আফসানার বাসার ভেতর গেল দেখে ভেতরের এক কোনের ঘরে   আফসানা বেনি দুলিয়ে বই পড়ছে শফিক তাকে ডাক দিল আস্তে করে শফিকের গলা শুনে আফসানা চমকে উঠল,তাকিয়ে দেখে শফিক আর রায়হান দাড়িয়ে আছে ওদের দেখে আফসানা থ। কিব্যাপার শফিক তোমরা? হ্যা অদিতির খবর জানতে আসলাম সে কই আমাদের ওকে একটু দরকার আছে বলল রায়হান।এটা শুনে একটু খারাপ লাগে আফসানার।ও আমার জন্যে নাহ অদিতির খোঁজে...... রাগ হয় তার শফিকের উপর।মনে মনে ভাবছে সে। এর পরই উত্তর দিল
আফসানাঃআজ অনেকদিন তারসাথে আমার কোন যোগাযোগ নেই।সে আমার সাথে কথাও বলছে না। কি হয়েছে তার জানো কিছু তোমরা?
শফিকঃহ্যা জানি আফসানা।কি? আফসানার প্রশ্ন।এখন  এসব নিয়ে আলাপ করব না তুমি এক কাজ করো বরং তাকে খবর দাও।আসতে বল এখানে বলল শফিক। আর আমাকে এক কাপ চা বলে রায়হান। ঠিক আছে বস তোমরা আমি দেখি কি করা যায়। এই বলে তাদের বসতে দিয়ে চলে গেল আফসানা। রায়হান গা এলিয়ে  আয়েশি ভঙ্গিতে বসে রইল,আফসানার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে দেখে সে বলে উঠল কিরে কি হয়েছে তোর শফিক ? আফসানা কে দেখে অমন করে তাকিয়ে আছস কেন? শফিক বলল আজ আফসানা কে অন্যরকম লাগছে দেখেছিস? রায়হান কি?? তুই না অদিতিকে ?!!!! বিস্ময় প্রকাশ করল সে ।
 আজ আফসানা শফিককে দেখে বের করে দেয় নাই কারন আজ অনেক দিন পরে তাকে দেখছে...।।মনে একটা অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করছে তার। যাহোক অদিতি আসছে না জানিয়ে দিল।এতে 
শফিক ও রায়হান যে কাজে অদিতিকে খুঁজেছিল তা হল না। অদিতির বাবার সাথে অনেক বড় বড় লোকের হাত রয়েছে যা শফিকের জেল যাওয়া ঠ্যাকাতে পারত। 
এদিকে... 
শফিক ওখানে শুনে অদিতির মেজাজ আরও খারাপ হল। অদিতি রাগে ক্ষোভে পুলিশে ফোন করে দিল। বলে দিল আফসানার ওখানটায় শফিক আর রায়হান আছে।  এই কাজ করার পরে অদিতির যখন হুশ ফিরল ততক্ষনে সব শেষ। শফিক আর রায়হান কে পুলিশ ধরে নিয়ে গেল ,শফিক ভাবল আফসানা এটা করেছে কারন তার বাসার সামনেই পুলিশ ছিল আর আফসানা অনেক বুঝানোর চেষ্টা করেও শফিকের  বিশ্বাস ফিরে পেল না। বলতে ও পারল না আফসানা সে ও শফিককে ভালবাসে।অনেক কষ্টে রায়হান পালিয়ে গিয়েছিল সেদিন কিন্তু শফিককে অনেক মারল পুলিশ এতে অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণের কারনে সে চিরতরে তার ২চোখ হারাল তার চেয়ে বেশি হারিয়েছে বিশ্বাস আফসানার প্রতি।অদিতি দেশ ছেড়ে চলে গেল ফ্যামিলি নিয়ে যেহেতু যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে কিন্তু কেউ জানল না এই কাজ অদিতি করেছে  আফসানা নয়।
শফিক সরে গেল আফসানার জীবন থেকে,আফসানার ভালবাসার না বলা কথাগুলি এভাবেই যেন অব্যক্ত রয়ে গেল।
.................................................................................................................................................................................................................................................................................
আমেরিকা২০১৫.....
সেদিনের সে ঘটনার পরে অদিতি আর দেশে ফিরেনি।সে জানার চেষ্টা ওকরেনি পরে কিহয়েছিল শফিকের, আজ এতবছর পরে যখন সে ও ৫০ ঊর্ধ্ব মহিলা হয়েছে বুঝতে পারছে যে কি অন্যায় টা সেদিন সে করেছে সে,আজ অনুশোচনায় দগ্ধ অদিতি।ক্যান্সারে আক্রান্ত আজ সে, তাই মারা যাবার আগে একবার আফসানা এর শফিকের সাথে দেখা করে ক্ষমা চাইবে সে। 
ঢাকা ২০১৫...
আফসানা ও জেনে গিয়েছিল এই কাজ অদিতির কিন্তু শফিক এটা বিশ্বাসই করেনি কারন সে জানত যে  অদিতি তাকে ভালবাসে আফসানা নয়। এমন কোন  প্রমান আফসানা ও দিতে পারেনি তাকে কারন অদিতি আসেনি সেদিন। এই  ভুল বুঝার মাশুল গুনেছে আফসানা।
শফিক চলে গেছে তার জীবন থেকে আর অদিতি ও তাকে ভুল বুঝেছে।
মাঝ থেকে আফসানাই দোষী হয়ে বয়ে বেড়াচ্ছে এই কষ্ট। আজ সেদিনের আফসানা সংসারি হয়েছে সত্য কিন্তু আফসানা আজ ও শফিককে ভুলেনি ভুলতে পারবে ও নাহ হয়ত কোনদিন।
তার মনের গহিনে জমে থাকা  না বলা ভাল বাসার কথাগুলো আজও...  এতবছর পরও...চোখের সামনে ভেসে উঠছে।সে কথা মনে পরতেই  তার দু চোখে অশ্রু... শুধুই অশ্রু। অতীতএর এই সৃতি তাকে কাঁদাবেই ভাবছে সে ইশ যদি একবার অদিতির সাথে সে দেখা করতে পারত। 
 হয়ত বিধাতা  তাদের চাওয়া পূরন করতে চাইল। তাই তো...
ঢাকা ভার্সিটির এক অনুষ্ঠানে...... দেখা হয়ে গেল, অদিতি এর সামনে আফসানা...... ২জন ২জন কে জড়িয়ে ধরল এর কাঁদল অনেক। মাফ চাইল অদিতি আফসানার কাছে শফিক এর খবর শুনে আরও অনুশোচনায়  দগ্ধ হ্ল। আফসানা ও মাফ করে দিল।
কিন্তু শফিক.................. জানা গেল না ফেরার দেশে চলে গেছে সে। এই খবরে আফসানার চেয়ে অদিতিই বেশি কষ্ট পেল। মাফ আর চাওয়া হল না তার বলা হল না শফিককে আমি ভুল করেছিলাম   

হয়ত এটাই বিধাতার চাওয়া ,হয়ত অনেক ভালো বাসার মত অদিতি আর  আফসানার ভাল বাসা ও এই রুপ ধারন করেছিল।একজন ভালবেসে হয়েছে অপরাধি আরেকজন  ভালবেসেই যেন অপরাধ করে ফেলেছিল  .........


লেখক...।। আসমানি

Comments

Popular posts from this blog

কুয়াশা

কবিতার ভালোবাসা ......

বঙ্গাসন—গুরুজী