ফেলে আসা কিছু কথা ( নিঃস্বার্থ প্রেম )

আজ আমি আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি একটি সত্যি কারের প্রেমের গল্প। যেটি ঘটেছিল আমার একজন বন্ধুর জীবনে। যদি আপনাদের ভাল লাগে। আশা করি এটি পড়ে আপনাদের ভাল লাগবে । এই গল্পটি আমার বন্ধু আমাকে নিজের মুখে বলেছে। যেভাবে গল্পটি আমার বন্ধু আমাকে বলেছিল ...............।।

আমি যখন ওমানে ছিলাম তখন একটা মেয়ের সাথে আমার ফ্রেন্ডশিপ হই। ফ্রেন্ডশিপটা হয়েছিল Facebook এ। মেয়েটা ও ওমানে থাকতো। মেয়েটার নাম ছিল তানিয়া। তানিয়া আমার কাছ থেকে ৪০০ মাইল দূরে থাকতো। ফ্রেন্ডশিপ হউয়ার পর থেকে ওর সাথে আমার প্রতিদিন চ্যাট হত। একদিন ও আমকে দেখা করতে বলল। আমি ও দেখা করলাম। যেদিন ওর সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম সেদিন ও একটি হলুদ রঙের জামা পড়েছিল। আর সেইদিনই তানিয়াকে আমার ভাল লেগে যাই। হইতবা আমাকে ও ওর ভাল লেগেছিল। সেদিন ও আমার কাছ থেকে আমার মোবাইল নাম্বার নেই। তারপর থেকে ওর সাথে আমার প্রায় ফোনে কথা হই। একদিন সে আমা্কে বলে ওর ভাল লাগার কথা , আমি ও বলে দিলাম । আর সেই থেকে শুরু হল আমাদের love story. ভালই চলছিল আমাদের ভালবাসার গল্প কাহিনি। একদিন 


হটাত করে তানিয়া বলল আমাদের সম্পর্কের কথা ও ওর বাসাই জানাবে। আমি ও বললাম জানাও, কারন আমার কোন ভয় ছিলনা ওকে না পাওয়ার। কারন আমার সব ছিল। ওমানে আমার দোকান ছিল। আর ও আমাকে কথা দিয়েছিল আমাকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করবেনা । আর আমার সেই believe ছিল, কারন ও আমাকে অনেক বেশি ভালবাসত। । আর ও আমাকে ছুঁয়ে, পবিত্র কোরআনের কছম করে শপথ করেছিল আমাকে ছাড়া কার ও হবেনা। ও ওর বাসাই জানালো। ওর মা বাবা আমাকে পছন্দ ও করল। তারপর থেকে আর ও গভীর হল আমাদের প্রেম। একদিন ওর মা আমাকে ডেকে বলল ওদের বাসার পাশে চলে যেতাম। আমি ও প্রতিদিন তানিয়াকে দেখব সে  আশাই। তখন আমি আ মার দোকান বিক্রি করে ওইখানে চলে যায়। ওইখানে যাওয়ার পর আমাদের সবসমই দেখা হত। আর যখনই দেখা হত তখনি ও আমাকে দূর থেকে দৌড়ে এসে আমাকে জরিয়ে ধরত। আমাকে  ভালবাসা ছিল অনেক গভীর। একজন আর একজনকে অনেক বেশি ভালবাসতাম। একদিন ওর বাবা আমাকে এসে বলল তানিয়ার জন্য অনেক বিয়ের প্রস্তাব আসতেছে কি করা যায় বলতো। আমি বললাম আপনারা যা  মনে করেন। তানিয়ার বাবা আমাকে আর একদিন  ডেকে বললেন তোমার বাবা মায়ের সাথে দেখা করব । আমি বললাম ওনারা দেশে, তখন তানিয়ার বাবা বলেন, তুমি তাদেরকে জানাও। আমি আমার বাবা মাকে বললাম কিন্তু আমার বাবা মা বললেন মেয়ে আর মেয়ের পরিবার না দেখে রাজি না। তখন তানিয়ার বাবা আমাকে বললেন তুমি যখন রাজি তানিয়া ও রাজি তাহলে সমস্যা কোথায়। কিছুদিন পরে তানিয়ার বাবা আমাকে বাসাই ডাকলেন, আর বললেন তানিয়ার জন্য একটি বিয়ের প্রস্তাব এসেছে ছেলে ব্যারিস্টার। অনেক টাকা। তখন আমি তানিয়ার বাবাকে বললাম আমি কি তানিয়ার জন্য টিক না? তখন তানিয়ার বাবা বললেন টিক না । আর তখন আমি তাকে বলেছিলাম আপনাদের কথায় আমি সব বিক্রি করে শ্যামলী থেকে এইখানে এসেছি। তখন তানিয়ার বাবা আমাকে বললেন টিক আছে তুমি আর একটা দোকান নিতে পারবে এইখানে? তখন আমি বললাম আমাকে কিছুদিন সমই দিন। তখন তিনি বললেন টিক আছে আমি তোমাকে ৬ মাস সমই দিলাম। আমি বললাম টিক আছে। আর আমি এইসব কথা তানিয়াকে জানালাম। তানিয়া বলল তুমি কিছু শুননা আমার তোমাকে ছাড়া কিছু লাগবেনা। আমার বাবা মা অনেক লোভী তুমি ওদের চিননা। আমি বললাম ওরা তোমার সুখের জন্য করছে। তখন তানিয়া বলল আমার কিচ্ছু চাইনা শুধু তোমাকে চাই আর আমি আল্লাহর কছম করে বলছি আমি তোমাকে ছাড়া কাওকে বিয়ে করবনা আর যদি করি আমার ৩০ কোরআনের কছম আমার ওপর আল্লাহর গজব পরবে। আমি ওকে অনেক বিশ্বাস করতাম কারন ও আমাকে এত বেশি লাভ করত আমার কথা ছাড়া এক পা ও নড়তনা । আর এমন একটা দিন যাইনি যে সে আমাকে ৫ মিনিট পর পর বলতনা " I love u "।  ওর বাবা আমাকে সবসমই ফোন করত আর জিজ্ঞেস করত দুকানের কথা। আমার টাকা জোগাড় হউয়ার পর আমি দোকান নিলাম তা ও তানিয়ার বাবার কথাই । ওনার বাড়ির পাশে ওনার কপিলের নামে । কারন তখন আমি তানিয়ার জন্য এত পাগল ছিলাম তানিয়ার বাবাকে নিজের বাবার মত মনে করতাম। তিনি ও আমার সাথে এমন ব্যাবহার করত যেন আমি ওনার ছেলে। দোকান নেওয়ার কিছুদিন পরে ওনাদের ব্যাবহার আমার সাথে অন্য রকম লক্ষ্য করলাম। তারপর ও আমি কিছু বলিনি , আমি তানিয়াকে সব কিছু জানাই জানানোর পর তানিয়া বলে দেখি আমি ব্যাপার টা কি। তখন তানিয়া তার একজন ছোট বোন ছিল নাম......আরসা সাবানা, তাকে দিয়ে খবরটা জানতে পারি তানিয়ার বাবা মা  আমার দোকানটা  নিজেদের নামে করে নেওয়ার প্লান করছে। তানিয়া আমাকে বিষয়টি জানাই। কথাটা শুনার পর আমি কিছু না ভেবে তানিয়ার বাবাকে গিয়ে বললাম আপনারা আমার সাথে যা করছেন ভাল করছেননা। আর টিক সেই দিন থেকে তানিয়ার বাবা মা আমি আর তানিয়ার মাঝখানে বাধা হয়ে দাঁড়ালো। তানিয়াকে আমার সাথে মিশতে দিচ্ছেনা, কথা বলতে দিচ্ছেনা, আর ও নানা বাধা। কিন্তু তখন আমার অনেক টাকা ওরা খেইয়ে ফেলেছে। তানিয়ার সাথে আমার ফোনে ও কথা হচ্ছেনা আর আমি ওদের বাসাই কল করি কিন্তু ওদের বাসা থেকে আমাকে হুমকি দেই যদি আমি কল করি তাহলে ওরা আমাকে পুলিশে দেবে। ব্যাপারটা আমি তানিয়া কেউ মানলাম না। আমরা আবার আগের মত রাত ১২- সকাল ৬ টা পর্যন্ত কথা বলতাম। তানিয়া আমাকে এত বেশি লাভ করত যে ও ওর বোনের খাওয়ার সাথে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দিত যাতে ও বলতে না পারে। একদিন ওর মা মোবাইলটা পেয়ে যাই আর আমার সাথে তানিয়ার ৩ দিন  ৩ রাত কথা হইনি , আমি পাগলের মত হয়ে গিয়েছিলাম শুধু সিগারেট খেয়েছি আর কিচ্ছুনা। ও নাকি কিচ্ছু খাইনি। ৩ দিন পর ওদের বাসাই একজন মেহমান আসে আর ও মেহমানের নাম্বার থেকে আমাকে কল করে, আর বলে ওর ওপর নাকি অনেক নির্যাতন হয়েছে। আর আমি সেদিন রাত ৩ টাই ওদের বাসার নিচে গিয়ে  আমি ওকে জানালা দিয়ে মোবাইল দিয়ে আসি । এইভাবে আমি ওকে ১ মাসে ১৫ টা মোবাইল দেই। দুঃখ যেন আমার পিছু ছাড়ল না। তানিয়ার রেজাল্ট দিল । ও পরীক্ষাই খারাপ করল। সারারাত আমার সাথে কথা বলে সকালে পরীক্ষা দিলে খারাপ তো হবেই। ওর থেকে জিজ্ঞেস করলে বলত পরীক্ষা ভাল হয়েছে।তানিয়ার বাবা মা আমার নামে থানাই জিডি করল পুলিশ আমাকে ধরে নিয়ে গেল আর আমার কপিল আমাকে ছাড়িয়ে আনল। আর সেদিন তানিয়া আমার কাছে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে অনেক কান্না করল আর বলল জান তুমি হার মানবেনা আমি তোমার সাথে আছি। তারপর থেকে আমি আর তানিয়া আবার কথা বলতাম দেখা করতাম। আমাদের ভালবাসা এমন ছিল যে আমরা একজন না খেলে অন্যজন খেতাম না। 
১০/৫/২০১৪ রাত ১ টাই তানিয়ার বাবা আমাকে কল করে বলে তানিয়ার অবস্থা  বেশি ভালনা, আমি তোমাদের কাছে হার মেনেছি। আমি তখনি পাগলের মত ছুটে তানিয়ার বাসাই যাত । তখন রাত ১ টা ২০ মিনিট। তানিয়ার বাসাই গিয়ে ওর বাবা মাকে সালাম দিয়ে বলি তানিয়া কোথায় ? ওনারা বলে তানিয়া রুমে , আমি তানিয়ার রুমে ডুকার সাথে সাথে ওরা বাহিরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেই। রুমে দেখলাম তানিয়া না আছে ওর বোন। ওর জামা ছেঁড়া। কান্না করছে ।তানিয়ার বাবা তখন মালিককে কল করে বলে পুলিশ আনার জন্য । মালিক সাথে পুলিশ নিয়ে আসে। আর বলে আমি নাকি ওদের মেয়েকে rape করতে চেয়েছি। পুলিশ আমাকে ধরে নিয়ে যাই আর নানা রকম নির্যাতন করে। তানিয়ার বাবা পুলিশকে টাকা দেই আমাকে মেরে স্বীকার করানোর জন্য। কিন্তু আমি বলিনি। কারন আমি কোন দোষ করিনি। যখন আমাকে কোটে নেওয়া হই তখন তানিয়া ও এসেছিল আর সেদিন সে আমাকে অস্বীকার করে চিনেনা বলে। আর তখনি আমার সারা দুনিয়া অন্ধকার মনে হয়েছিল , কার জন্য আজ এতকিছু । তবু ও আমার বিশ্বাস ছিল আমার ভালবাসার ওপর যে ওকে হইত হুমকি দিয়েছে কোনকিছুর। কিন্তু না সত্যি ও আমার সথে বেইমানি করেছে। ওর মা বাবা ও সবাই কোরআন মাথাই নিয়ে বলেছে আমাকে চিনেনা। আর সেইদিন আমার সব আশা সপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেল। নিজের প্রতি ঘৃণা ধরে গেল। কার জন্য কি করেছি। তারপরের দিন আমার মোবাইলে তানিয়া ও আমার কিছু ছবি ছিল সেগুলো দেখিএ আমি জামিন পাই। অনেকদিন অসুস্ত ছিলাম। । নিজের প্রতি ঘৃণা ধরে গেল। কার জন্য কি করেছি। আর ততদিনে আমার দোহকানটা নিজের নামে করে নিল তানিয়ার বাবা। তানিয়ার বাবা মা তানিয়াকে নিয়ে দেশে চলে আসে। আর আমি সেটা জানতে পেরে আমার সব কিছু বিক্রি করে দেশে চলে আসি। ভেবেছিলাম বিদেশে সুযোগ হইয়নি এইখানে হবে। সে আমাকে কথা দিয়েছিল আমার সাথে যেই ভাবে হউক পালাবে। তাই দেশে আসার পর থেকে টানা ১৭ দিন আমি ctg theke hathazari গিয়ে ওদের বাসার নিচে দাড়িয়ে  থাকতাম , রাত ১১ টা থেকে ২-৩ টা পর্যন্ত। কিন্তু না ......আমার তানিয়া আসলো না। হেরে গেলাম আমি। আমার ভালবাসার মানুষটি আমাকে ছেড়ে ভালই আছে। আর হলনা যোগাযোগ। এখন সে মুরাদপুর থাকে স্বামীর সাথে সুখের ঘর করছে আমাকে কাঁদিয়ে। আর আমার ও বিদেশে যাওয়া হলনা। থেকে গেলাম দেশে বুকের মাঝে হাজারো কষ্ট নিয়ে।

r o kicu jante chaile click korun www.rupkonna.com


Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog

কুয়াশা

কবিতার ভালোবাসা ......

বঙ্গাসন—গুরুজী